কানে খৈল (Ear Canal Dryness or Ear Scab) বলতে সাধারণত কানের ভিতরের ত্বকে শুষ্কতা, খসখসে বা কোঁচকানো অংশ সৃষ্টি হওয়াকে বোঝানো হয়। এটি কানে খৈল বা শুষ্ক ত্বক হিসেবে পরিচিত হয়ে থাকে। কানে খৈল সাধারণত একটি ত্বকের সমস্যা হতে পারে যা কানে অস্বস্তি, চুলকানি বা স্রাবের সৃষ্টি করতে পারে।
কারণ:
কানে খৈল হওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে:
- অ্যালার্জি:
- ত্বকে অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া (যেমন কিছু খাবার বা পরিবেশগত অ্যালার্জি) কানে শুষ্কতা বা খৈল সৃষ্টি করতে পারে।
- কানের ইনফেকশন:
- কানে ইনফেকশন (যেমন অটিটিস এক্সটার্না) হওয়া কানের ভিতরে বা বাইরের ত্বকে শুষ্কতা সৃষ্টি করতে পারে এবং খৈল হতে পারে।
- সোরিয়াসিস বা একজিমা:
- একজিমা বা সোরিয়াসিসের মতো ত্বকের রোগ কানে শুষ্কতা, খসখসে অংশ এবং খৈল তৈরি করতে পারে। এগুলি সাধারণত ত্বকের অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
- কানের ওয়াক্স বা ময়লা জমা:
- কানে অতিরিক্ত ময়লা বা ওয়াক্স জমে গেলে, এটি কানের ত্বককে শুষ্ক করে ফেলতে পারে এবং খৈল সৃষ্টি হতে পারে।
- হাওয়া বা আবহাওয়া পরিবর্তন:
- শীতল বা অত্যাধিক গরম পরিবেশে কানের ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। বাতাসের অস্বাভাবিক আর্দ্রতা বা শুকনো আবহাওয়ার কারণে কানের ত্বক শুকিয়ে গিয়ে খৈল হতে পারে।
- অতিরিক্ত জল ব্যবহারের ফলে শুষ্কতা:
- বেশি সময় ধরে পানি বা সাবান দিয়ে কানে পরিষ্কার করা কানের ত্বক শুষ্ক করে ফেলতে পারে। অতিরিক্ত জল ব্যবহারে কানের প্রাকৃতিক তেল কমে গিয়ে শুষ্কতা বা খৈল সৃষ্টি হতে পারে।
- কানে আঘাত বা ট্রমা:
- কানে আঘাত বা খুব শক্তভাবে কিছু দিয়ে কানে চাপ দিলে তাও শুষ্কতা বা খৈল সৃষ্টি করতে পারে।
লক্ষণ:
কানে খৈল হওয়ার কিছু সাধারণ লক্ষণ:
- কানে শুষ্কতা বা খসখসে ত্বক।
- কানে চুলকানি বা জ্বালা।
- কানে স্রাব বা অস্বাভাবিক তরল বের হওয়া (যা ইনফেকশনের লক্ষণ হতে পারে)।
- কানে খৈল বা ত্বক উঠতে পারে।
- কানে অস্বস্তি বা ব্যথা (বিশেষ করে ইনফেকশন থাকলে)।
প্রতিকার:
কানে খৈল বা শুষ্কতা দূর করার জন্য কিছু সাধারণ প্রতিকার:
- কানে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার:
- কানে শুষ্কতা বা খৈল থাকলে, লবণযুক্ত পানি বা অয়েল দিয়ে কানের ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করা যেতে পারে। তবে কানে খুব বেশি কিছু ঢুকিয়ে পরিষ্কার করা উচিত নয়।
- অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম বা তেল ব্যবহার:
- যদি কানের ত্বকে ইনফেকশন বা প্রদাহ থাকে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিসেপটিক বা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে।
- শুষ্কতা কমানোর জন্য বিশেষ তেল ব্যবহার:
- যেমন অলিভ অয়েল বা কোকোনাট অয়েল কানে মৃদু ব্যবহার করা যেতে পারে, যা ত্বককে নরম করে।
- অ্যালার্জি বা ত্বকের রোগ:
- যদি কানে খৈল অ্যালার্জি বা ত্বকের রোগের কারণে হয়, তবে অ্যান্টিহিস্টামিন বা ত্বক সংক্রান্ত ওষুধ ব্যবহার করা উচিত।
- কানে ওয়াক্স পরিষ্কার করা:
- কানে ময়লা বা ওয়াক্স জমে থাকলে, তা চিকিৎসকের পরামর্শে পরিষ্কার করা উচিত। তবে কানে কিছু ঢুকিয়ে পরিষ্কার করার চেষ্টা করবেন না।
- তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ:
- শীত বা গরম আবহাওয়ার কারণে কানে শুষ্কতা বাড়লে, কানের ত্বককে সুরক্ষিত রাখতে বিশেষ যত্ন নিন (যেমন শীতের সময় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা বা শুষ্কতারোধী ক্রিম ব্যবহার করা)।
- চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া:
- যদি কানে খৈল দীর্ঘস্থায়ী হয় বা গুরুতর অস্বস্তির সৃষ্টি করে, তবে একটি ENT (কান, গলা, নাক) বিশেষজ্ঞ এর পরামর্শ নেওয়া উচিত।
এছাড়া, কানে অস্বাভাবিক স্রাব, ব্যথা, কিংবা অন্যান্য গুরুতর লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।