Best Homeo Doctor

নাসিকা অর্বুদ কি,কারন,লক্ষন,প্রতিকার

নাসিকা অর্বুদ (Nasal Tumor) হল নাকের ভেতরের অংশে বা নাসাল কেভিটির (Nasal Cavity) মধ্যে অস্বাভাবিক কোষের বৃদ্ধির ফলস্বরূপ তৈরি হওয়া একটি টিউমার। এটি সাধারণত সাধারণ জ্বর, সর্দি বা সংক্রমণ হিসেবে শুরু হলেও কিছু ক্ষেত্রে এটি ক্যান্সারের রূপ নিতে পারে। নাসিকায় অর্বুদ হলে নাকের ভিতরে বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দেয় এবং এটি সময়মতো চিকিৎসা না হলে গুরুতর হতে পারে।

কারণ:

  1. অনির্দিষ্ট কোষের বৃদ্ধি: নাসিকায় অর্বুদ সাধারণত কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি থেকে হয়, যা নির্দিষ্টভাবে সংক্রমণের কারণে বা অন্যান্য কারণে ঘটতে পারে।
  2. জেনেটিক কারণে: কিছু মানুষের মধ্যে বংশগতভাবে নাসিকা অর্বুদ হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে।
  3. প্রদাহ বা দীর্ঘস্থায়ী ইনফেকশন: দীর্ঘসময় ধরে নাকের সংক্রমণ বা প্রদাহ থাকলে তা টিউমার সৃষ্টির কারণ হতে পারে।
  4. অ্যালার্জি: অ্যালার্জির কারণে নাসিকায় দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ তৈরি হতে পারে, যা টিউমার সৃষ্টি করতে পারে।
  5. প্রাকৃতিক রাসায়নিক বা পরিবেশগত কারণ: পরিবেশগত দূষণ বা রাসায়নিক উপাদানও নাসিকায় টিউমার তৈরির কারণ হতে পারে।
  6. বয়স লিঙ্গ: সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে টিউমারের সম্ভাবনা বেশি, তবে পুরুষদের মধ্যে এটি নারীদের তুলনায় বেশি হতে দেখা যায়।

লক্ষণ:

  1. নাক বন্ধ হওয়া: নাসিকা অর্বুদের কারণে নাক বন্ধ হয়ে যেতে পারে, এবং শ্বাস নিতে সমস্যা হতে পারে।
  2. নাকে রক্তপাত: অর্বুদ থাকলে নাক থেকে রক্তপাত হতে পারে, বিশেষত বেশি সময় ধরে যদি এটি বৃদ্ধি পায়।
  3. মাথাব্যথা বা চাপ: নাসিকায় টিউমার থাকার কারণে মাথাব্যথা বা নাকের চারপাশে চাপ অনুভূতি হতে পারে।
  4. নাক থেকে পুঁজ বা শ্লেষ্মা বের হওয়া: টিউমারের কারণে নাকের ভিতরে প্রদাহ সৃষ্টি হতে পারে এবং পুঁজ বের হতে পারে।
  5. স্বাদ গন্ধের অনুভূতি কমে যাওয়া: নাসিকা অর্বুদ থাকলে গন্ধ বা স্বাদ কমে যেতে পারে।
  6. চোখে বা গালটিতে ব্যথা: যদি টিউমার বড় হয়, তাহলে এটি চোখ বা গাল অংশে ব্যথা তৈরি করতে পারে।
  7. শ্বাসকষ্ট: নাসিকা অর্বুদ বড় হলে শ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে।
  8. দীর্ঘস্থায়ী সর্দি বা কাশি: টিউমার থাকলে সাধারণ সর্দি বা কাশি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।

প্রতিকার:

  1. ডাক্তার দ্বারা নির্ণয়: নাসিকা অর্বুদ হলে প্রথমেই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারকে পরামর্শ নিতে হবে। ডাক্তার সঠিক পরীক্ষা করে (যেমন, সিটি স্ক্যান বা এমআরআই) টিউমারের ধরন এবং অবস্থান নির্ধারণ করবেন।
  2. সার্জারি (অস্ত্রোপচার): যদি নাসিকায় অর্বুদ বড় হয় এবং এটি ক্যান্সার না হয়, তবে অস্ত্রোপচার করে টিউমারটি অপসারণ করা যেতে পারে।
  3. রেডিওথেরাপি বা কেমোথেরাপি: যদি টিউমার ক্যান্সার হয়, তবে রেডিওথেরাপি বা কেমোথেরাপি প্রয়োজন হতে পারে।
  4. দীর্ঘস্থায়ী ইনফেকশন বা প্রদাহের চিকিৎসা: যদি এটি কোনো দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহের কারণে হয়ে থাকে, তবে তা চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
  5. অ্যান্টিবায়োটিক এবং অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি ঔষধ: যদি টিউমার সংক্রমণ বা প্রদাহের কারণে হয়ে থাকে, তবে উপযুক্ত অ্যান্টিবায়োটিক এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ঔষধ প্রয়োগ করা হতে পারে।
  6. নাসাল ডিকনজেস্ট্যান্ট: নাকের শ্লেষ্মা পরিষ্কার এবং শ্বাসপ্রশ্বাস সহজ করতে নাসাল ডিকনজেস্ট্যান্ট ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে।

চিকিৎসকের পরামর্শ:

যদি আপনি নাসিকায় কোনো ধরনের টিউমার বা অস্বাভাবিক পরিবর্তন লক্ষ্য করেন, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। নাসিকায় টিউমার সাধারণত শ্বাসকষ্ট, রক্তপাত বা অন্য কোনো গুরুতর লক্ষণের কারণ হতে পারে, তাই যথাযথ চিকিৎসা এবং সময়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *