Best Homeo Doctor

চোখে রক্তাধিক্য কারন,লক্ষন,প্রতিকার

চোখে রক্তাধিক্য (Subconjunctival Hemorrhage) হল চোখের সাদা অংশের নিচে রক্তপাত হওয়া, যা সাধারণত চোখের কোণায় বা সাদা অংশে লাল বা রক্তের দাগ সৃষ্টি করে। এটি খুবই সাধারণ এবং সাধারণত এটি তেমন কোনো বিপদজনক সমস্যা সৃষ্টি করে না। তবে, কখনো কখনো এটি ভয়ানক হতে পারে, বিশেষত যদি এর পেছনে অন্য কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে।

কারণ:

চোখে রক্তাধিক্যের কিছু সাধারণ কারণ হলো:

  1. আঘাত: চোখে কোনো আঘাত বা চাপ (যেমন হাত দিয়ে চোখে চাপ দেয়া, চোখে তীক্ষ্ণ কিছু লাগা) চোখের রক্তনালীতে ক্ষত সৃষ্টি করে রক্তপাত হতে পারে।
  2. খুব বেশি কাশি বা হাঁচি: খুব জোরে কাশি বা হাঁচির কারণে চোখের রক্তনালীতে চাপ সৃষ্টি হতে পারে, যার ফলে রক্তপাত ঘটতে পারে।
  3. অতিরিক্ত চোখের চাপ: দীর্ঘ সময় ধরে চোখে চাপ (যেমন কম্পিউটার বা মোবাইল ব্যবহার) বা ঘুমের অভাবের কারণে চোখে চাপ পড়ে রক্তপাত হতে পারে।
  4. উচ্চ রক্তচাপ: উচ্চ রক্তচাপের কারণে রক্তনালীগুলি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং তারা ফেটে যেতে পারে, যার ফলে রক্তাধিক্য হতে পারে।
  5. রক্তস্বল্পতা বা রক্তজমাট: কিছু রক্তজনিত রোগ, যেমন রক্তস্বল্পতা বা রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা (Hemophilia) থাকলে রক্তপাত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
  6. অ্যালকোহল বা মাদকদ্রব্যের প্রভাব: অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন বা মাদকদ্রব্যের ব্যবহারেও রক্তনালীর ক্ষতি হতে পারে, যার ফলে রক্তপাত হতে পারে।
  7. ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: রক্ত পাতলা করার ওষুধ (যেমন, Aspirin) গ্রহণের কারণে রক্তপাত ঘটতে পারে।

লক্ষণ:

  1. লাল দাগ: চোখের সাদা অংশে লাল বা রক্তের দাগ দেখা যায়। এটি সাধারণত খুবই স্পষ্ট এবং চোখের কোণ বা পুরো সাদা অংশে ছড়িয়ে যেতে পারে।
  2. ব্যথা বা অস্বস্তি: সাধারণত চোখে কোনো ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভূত হয় না, তবে কিছু ক্ষেত্রে অস্বস্তি বা চাপ অনুভূত হতে পারে।
  3. চোখে জ্বালা বা গা দিয়ে জল আসা: চোখে জ্বালা, চুলকানি বা হালকা অস্বস্তি অনুভূত হতে পারে।
  4. দৃষ্টিতে সমস্যা: সাধারণত দৃষ্টিতে কোনো সমস্যা হয় না, তবে অত্যন্ত বিরল ক্ষেত্রে যদি রক্তনালী অত্যন্ত চাপ সৃষ্টি করে, তখন অল্প সময়ের জন্য দৃষ্টিতে বিঘ্ন ঘটতে পারে।

প্রতিকার:

  1. প্রাথমিকভাবে স্নিগ্ধতা: যদি চোখে রক্তাধিক্য হয়, তাহলে গরম বা ঠাণ্ডা সেঁক (cold compress) করা যেতে পারে, যাতে কিছুটা আরাম পাওয়া যায় এবং ফোলাভাব কমে।
  2. বিশ্রাম চোখের যত্ন: চোখকে বিশ্রাম দেয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অস্বস্তি, চোখে চাপ বা দীর্ঘ সময় স্ক্রীন ব্যবহার এড়িয়ে চলা উচিত।
  3. উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: যদি উচ্চ রক্তচাপের কারণে এটি হয়ে থাকে, তবে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ নিতে হবে।
  4. অতিরিক্ত কাশি বা হাঁচি এড়ানো: যদি চোখে রক্তাধিক্য কাশি বা হাঁচির কারণে হয়, তবে হাঁচি বা কাশির সময় নরমভাবে চাপ দিন এবং অতিরিক্ত চাপ এড়াতে চেষ্টা করুন।
  5. চোখের সুরক্ষা: চোখে আঘাত বা চাপ প্রতিরোধে সুরক্ষা চশমা বা গগলস ব্যবহার করতে পারেন, বিশেষত যদি কোনো শারীরিক কাজ বা খেলাধুলা করেন।
  6. চিকিৎসকের পরামর্শ: যদি রক্তাধিক্য গুরুতর হয় বা যদি দীর্ঘস্থায়ী থাকে, তবে একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। কিছু ক্ষেত্রে রক্তপাত নিয়ন্ত্রণের জন্য চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে।

সাধারণত চোখে রক্তাধিক্য গুরুতর নয় এবং সময়ের সাথে সাথে এটি নিজের থেকে সেরে যায়, তবে যদি এটি প্রায়ই ঘটে বা কোনো বড় স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করে, তবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া উচিত।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *