চোখে ব্যথা (Eye Pain) একটি সাধারণ সমস্যা, যা অনেক কারণে হতে পারে। এটি সাধারণত চোখের কোন অংশে ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভব হতে পারে এবং তা নির্ভর করে এর কারণের উপর।
কারণ:
১. চোখে কোনো বিদেশী বস্তু ঢোকা: চোখে ধুলা, মশা, পিপঁড়া বা অন্য কোনো বস্তুর ঢোকা, যার কারণে চোখে ব্যথা হতে পারে। 2. চোখের ইনফেকশন (Infection): চোখে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে ব্যথা হতে পারে, যেমন কনজাঙ্কটিভাইটিস (pink eye) বা হরমাল ইনফেকশন। 3. শুষ্ক চোখ (Dry Eyes): চোখের পৃষ্ঠে যথেষ্ট আর্দ্রতা না থাকলে শুষ্ক চোখের সমস্যা হয়, যার কারণে চোখে ব্যথা হতে পারে। 4. গ্লুকোমা (Glaucoma): এটি একটি গুরুতর চোখের রোগ, যেখানে চোখের চাপ বৃদ্ধি পায় এবং চোখে তীব্র ব্যথা হতে পারে। 5. আলসার বা চোখে ক্ষত: চোখের পাতায় বা চোখের পৃষ্ঠে কোনো ক্ষত বা আলসার তৈরি হলে তা ব্যথার কারণ হতে পারে। 6. মাইগ্রেন বা মাথাব্যথা: মাইগ্রেনের কারণে বা মাথাব্যথার ক্ষেত্রে চোখের ব্যথা অনুভূত হতে পারে। 7. স্ট্রেন বা অতিরিক্ত চাপ: দীর্ঘ সময় কম্পিউটার বা মোবাইল ব্যবহার করলে চোখে চাপ পড়ে এবং ব্যথা হতে পারে। 8. চোখের ছানি (Cataract): ছানি পড়ার কারণে চোখে ব্যথা হতে পারে, তবে এটি সাধারণত পরে ঘটে। 9. সাইনাস ইনফেকশন: সাইনাসের সমস্যার কারণে চোখের আশেপাশে ব্যথা হতে পারে।
লক্ষণ:
- চোখে জ্বালা বা চুলকানি।
- চোখ লাল হওয়া বা ফোলাভাব।
- চোখের আশেপাশে বা ভেতরে তীব্র ব্যথা।
- চোখে পানি পড়া বা চোখের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হারানো।
- দৃষ্টি ঝাপসা বা ঝলকানি দেখা।
- চোখে চাপ বা অস্বস্তি অনুভব করা।
- চোখের চারপাশে বা মাথার পিছনে ব্যথা।
প্রতিকার:
১. চোখ পরিষ্কার রাখুন: চোখে কোনো বস্তু বা ধুলা ঢুকলে তা সতর্কভাবে পরিষ্কার করে ফেলুন। ঠান্ডা পানি দিয়ে চোখ ধুয়ে নিতে পারেন। 2. চোখের বিশ্রাম: কম্পিউটার বা মোবাইল ব্যবহার করার সময় প্রতি ২০ মিনিটে ২০ সেকেন্ড বিশ্রাম নিতে পারেন (২০-২০-২০ নিয়ম)। 3. চোখের টিউবলস (Eye drops): শুষ্ক চোখের সমস্যায় আর্দ্রকরণ জাতীয় ড্রপ ব্যবহার করা যেতে পারে। 4. গরম বা ঠান্ডা সেঁক: চোখে চাপ বা শুষ্কতার কারণে ব্যথা হলে গরম বা ঠান্ডা সেঁক দিয়ে আরাম দিতে পারেন। 5. চোখের ইনফেকশনে অ্যান্টিবায়োটিক: যদি চোখে ইনফেকশন থাকে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিভাইরাল ড্রপ ব্যবহার করা হতে পারে। 6. চশমা ব্যবহার: যদি চোখের সমস্যা কম্পিউটার বা মোবাইল ব্যবহারের কারণে হয়, তবে প্রপার চশমা বা লেন্স ব্যবহার করা যেতে পারে। 7. গ্লুকোমা বা গুরুতর রোগে চিকিৎসা: যদি গ্লুকোমা বা অন্য কোনো গুরুতর সমস্যা থাকে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। 8. মাথাব্যথার জন্য মাইগ্রেন ওষুধ: মাইগ্রেনের কারণে চোখে ব্যথা হলে মাইগ্রেনের জন্য উপযুক্ত ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে। 9. চোখের ডাক্তার পরামর্শ: যদি ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা খুব তীব্র হয়, তবে একজন চোখের বিশেষজ্ঞের (অপথালমোলজিস্ট) পরামর্শ নিতে হবে।
আপনার চোখে যদি ব্যথা থাকে এবং তা দীর্ঘ সময় ধরে চলে, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, বিশেষ করে যদি গ্লুকোমা বা ইনফেকশনের লক্ষণ থাকে।