Best Homeo Doctor

চোখে ঝাপসা দেখা কারন,লক্ষন,প্রতিকার

চোখে ঝাপসা দেখা (Blurred Vision) একটি সাধারণ সমস্যা, যা চোখের বিভিন্ন রোগ বা পরিস্থিতির কারণে হতে পারে। এর মাধ্যমে দৃষ্টিশক্তির অস্বাভাবিক পরিবর্তন ঘটে, এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।

কারণ:

  1. রিফ্র্যাকটিভ ত্রুটি (Refractive Errors):
    • মায়োপিয়া (Nearsightedness): কাছের জিনিস স্পষ্ট দেখতে পাওয়ার পরেও দূরের জিনিস ঝাপসা হয়ে যায়।
    • হাইপারমেট্রোপিয়া (Farsightedness): দূরের জিনিস দেখতে সমস্যা হলেও কাছের জিনিস ঝাপসা দেখা যায়।
    • এস্টিগম্যাটিজম (Astigmatism): চোখের লেন্স বা কর্নিয়া অসম্পূর্ণ আকারের হলে দৃষ্টি ঝাপসা হতে পারে।
  2. ডায়াবেটিস: উচ্চ রক্তের চিনির কারণে চোখের রেটিনার ক্ষতি হতে পারে, যা ঝাপসা দৃষ্টি তৈরি করে।
  3. ক্যাটারাক্ট (Cataract): ছানি পড়লে চোখের লেন্স মেঘলা হয়ে যায়, যার ফলে দৃষ্টি ঝাপসা হতে পারে।
  4. গ্লুকোমা (Glaucoma): চোখের চাপ বৃদ্ধি পেলে দৃষ্টিশক্তি ধীরে ধীরে কমে যেতে পারে এবং ঝাপসা দৃষ্টি হতে পারে।
  5. ম্যাকুলার ডিজেনারেশন (Macular Degeneration): রেটিনার মধ্যবর্তী অংশের সমস্যা, বিশেষ করে বয়স্কদের মধ্যে, দৃষ্টির অস্বাভাবিক পরিবর্তন তৈরি করতে পারে।
  6. অস্থির চোখের চাপ (Eye Strain): দীর্ঘ সময় কম্পিউটার বা মোবাইল ব্যবহারের ফলে চোখে চাপ পড়তে পারে, যা দৃষ্টি ঝাপসা করতে পারে।
  7. চোখের ইনফেকশন বা প্রদাহ (Eye Infection or Inflammation): চোখের প্রদাহ বা সংক্রমণের কারণে চোখের পৃষ্ঠে সমস্যা তৈরি হতে পারে, যা দৃষ্টিশক্তি কমাতে পারে।
  8. মাইগ্রেন (Migraine): মাইগ্রেন বা মাথাব্যথার ফলে চোখে ঝাপসা দেখা বা ঝলকানি হতে পারে।
  9. নিউরোলজিক্যাল সমস্যা: মস্তিষ্কের কিছু রোগ, যেমন স্ট্রোক বা নার্ভের সমস্যা, চোখের ঝাপসা দৃষ্টির কারণ হতে পারে।

লক্ষণ:

  • ঝাপসা বা অস্পষ্ট দৃষ্টি: দূরের বা কাছের কোন কিছু অস্পষ্টভাবে দেখা।
  • দৃষ্টি স্বচ্ছ না হওয়া: এমনকি পরিষ্কার জিনিসও অস্পষ্ট বা ধোঁয়াশা হয়ে দেখা।
  • চোখে ক্লান্তি বা চাপ অনুভব: চোখের পেশি ক্লান্ত হয়ে গেলে ঝাপসা দেখা হতে পারে।
  • আলো বা উজ্জ্বল জিনিসে ঝাপসা দৃষ্টি: সূর্যের আলো বা উচ্চ আলোতে দৃষ্টি ঝাপসা হতে পারে।
  • দৃষ্টি স্পষ্ট না হওয়া: দৃষ্টি দ্রুত পরিবর্তন হওয়া বা কিছু সময়ের জন্য দৃষ্টি হারানো।

প্রতিকার:

  1. চশমা বা কন্ট্যাক্ট লেন্স: যদি রিফ্র্যাকটিভ ত্রুটি থাকে, তবে সঠিক চশমা বা কন্ট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করুন।
  2. চোখের বিশ্রাম: দীর্ঘ সময় কম্পিউটার বা মোবাইল ব্যবহার করলে প্রতি ২০ মিনিট পর চোখে বিশ্রাম দিন (২০-২০-২০ নিয়ম)।
  3. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: ডায়াবেটিস থাকলে রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করুন।
  4. চোখের ড্রপ (Eye Drops): চোখে শুষ্কতা বা প্রদাহ থাকলে আর্দ্রকরণ ড্রপ বা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ড্রপ ব্যবহার করতে পারেন।
  5. ক্যাটারাক্ট সার্জারি: যদি ছানি পড়ার কারণে ঝাপসা দৃষ্টি হয়ে থাকে, তবে চোখের ডাক্তার সার্জারি পরামর্শ দিতে পারেন।
  6. গ্লুকোমার চিকিৎসা: গ্লুকোমা থাকলে নিয়মিত চোখ পরীক্ষা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করুন।
  7. বয়সজনিত ম্যাকুলার ডিজেনারেশন: বয়সের কারণে যদি এই সমস্যা হয়, তবে বিশেষ ভিটামিন বা ওষুধের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ করা যেতে পারে।
  8. মাইগ্রেনের চিকিৎসা: মাইগ্রেন থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ বা চিকিৎসা গ্রহণ করুন।
  9. চোখের ডাক্তার পরামর্শ: যদি ঝাপসা দৃষ্টি দীর্ঘস্থায়ী হয় বা অন্য কোনো গুরুতর লক্ষণ থাকে, তবে দ্রুত চোখের ডাক্তার (অপথালমোলজিস্ট) পরামর্শ নিন।

ঝাপসা দৃষ্টি যদি সাধারণ সমস্যা হয় তবে এটি সাময়িক হতে পারে, তবে যদি এটি দীর্ঘস্থায়ী বা গুরুতর হয়ে ওঠে, তখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *