চোখের কোনে ঘা (Eye corner ulcer) বা চোখের কোনে ছোট ঘা হল একটি সাধারণ সমস্যার নাম, যা চোখের কোণ বা পাপড়ির আশেপাশে দেখা দেয়। এটি সাধারণত একটি প্রদাহজনিত বা সংক্রমণের কারণে হয় এবং চোখে অনেক discomfort বা অসুবিধা সৃষ্টি করতে পারে।
কারণ:
চোখের কোনে ঘা হওয়ার বেশ কিছু সাধারণ কারণ আছে:
- ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের সংক্রমণ: চোখের কোনে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে ঘা হতে পারে। যেমন, conjunctivitis (চোখের প্রদাহ) বা অন্যান্য সংক্রমণ।
- অ্যালার্জি: চোখে অ্যালার্জির কারণে চোখে জ্বালা, খোঁচা এবং ঘা হতে পারে।
- কনট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার: অস্বাস্থ্যকর বা দীর্ঘ সময় কনট্যাক্ট লেন্স পরার কারণে চোখের কোনে ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে।
- ধুলাবালি বা ময়লা: চোখে ধুলাবালি, ময়লা বা দুষিত পদার্থ প্রবেশ করলে চোখের কোণে ঘা হতে পারে।
- চোখের পাতা বা কোণায় রুক্ষতা: চোখের পাতা বা কোণার ত্বক শুকিয়ে বা রুক্ষ হলে ঘা হতে পারে, বিশেষত শুষ্ক আবহাওয়া বা অতিরিক্ত চোখের ঘষা থেকে।
- মারাত্মক রক্তসঞ্চালন সমস্যা: কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন ডায়াবেটিস, রক্তসঞ্চালন সমস্যা, বা রক্তস্বল্পতার কারণে চোখের কোণেও ঘা হতে পারে।
- অতিরিক্ত চাপ: কখনো কখনো চোখের ওপর অত্যধিক চাপ, যেমন খুব বেশি স্ক্রীন বা চোখে চাপ পড়লে চোখের কোণে ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে।
লক্ষণ:
- চোখের কোণায় লাল ভাব বা প্রদাহ: চোখের কোণায় লাল ভাব বা ফুলে যাওয়া দেখা যেতে পারে।
- ব্যথা বা অস্বস্তি: চোখের কোণায় ঘা থাকলে ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভূত হতে পারে।
- চোখে জল আসা: ঘা থাকার কারণে চোখে অতিরিক্ত জল আসা, চোখে ঝাপসা বা অস্বস্তি হতে পারে।
- গা দিয়ে চুলকানি বা জ্বালা: চোখে চুলকানি বা জ্বালাভাব অনুভূত হতে পারে।
- গা–জ্বর বা শরীরের অন্য উপসর্গ: কিছু ক্ষেত্রে ঘা সংক্রমণের কারণে গা-জ্বর বা অন্যান্য উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
- চোখের কোনে সাদা দাগ বা ক্ষত: চোখের কোণায় সাদা বা পেরেকের মতো ক্ষত দেখতে পাওয়া যেতে পারে।
প্রতিকার:
- চোখ পরিষ্কার রাখা: চোখের কোণ পরিষ্কার রাখা গুরুত্বপূর্ণ। আলতোভাবে পরিষ্কার জল দিয়ে চোখ ধুয়ে নিতে পারেন।
- গরম সেঁক: গরম পানির সেঁক দিয়ে চোখের কোণ কমপক্ষে ৫-১০ মিনিট সেঁক দিন, এটি প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে।
- চোখে ড্রপ ব্যবহার: অ্যালার্জি বা সংক্রমণের কারণে যদি ঘা হয়, তবে অ্যালার্জি বা অ্যান্টিবায়োটিক চোখের ড্রপ ব্যবহার করা যেতে পারে।
- কনট্যাক্ট লেন্স এড়ানো: যদি কনট্যাক্ট লেন্সের কারণে ঘা হয়, তাহলে কিছু সময়ের জন্য কনট্যাক্ট লেন্স পরা বন্ধ করে দিন।
- চোখের ঘষা এড়ানো: চোখের কোণ বা পাপড়িতে বেশি চাপ বা ঘষা না দেওয়া উচিত, বিশেষত যখন ঘা থাকলে।
- অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টি–ইনফ্ল্যামেটরি ওষুধ: সংক্রমণ বা প্রদাহ থাকলে, চিকিৎসক অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ওষুধের পরামর্শ দিতে পারেন।
- চিকিৎসকের পরামর্শ: যদি ঘা বড় বা দীর্ঘস্থায়ী হয়, বা যদি এতে কোনো গুরুতর সমস্যা থাকে, তবে একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া উচিত।
চোখের কোনে ঘা সাধারনত চিকিৎসার মাধ্যমে সেরে যায়, তবে যদি এটি প্রায়ই হয় বা অন্য কোনো সমস্যা সৃষ্টি করে, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।