Best Homeo Doctor

গালে ঘা কি,কারন,লক্ষন,প্রতিকার

গালে ঘা (Mouth Ulcers on Cheeks) হল মুখের অভ্যন্তরে বা গালের ভেতরের অংশে ক্ষত বা আলসার, যা বেশ যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে। এই ঘা খাওয়া, কথা বলা বা পান করতে অসুবিধা সৃষ্টি করে। গালে ঘা সাধারণত অস্থায়ী হলেও কিছু ক্ষেত্রে বারবার বা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।

গালে ঘার কারণ:

  1. মুখের আঘাত বা চোট: দাঁত বা অন্য কোনো অজ্ঞাত কারণে গালে আঘাত লাগলে ঘা হতে পারে। অনেক সময় দাঁতের ব্রেস, ভাঙা দাঁত বা ধারালো দাঁতের প্রান্তও এই ধরনের ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে।
  2. অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: অতিরিক্ত মসলাযুক্ত, ঝাল, তিক্ত বা অম্লীয় খাবার খাওয়ার কারণে গালে ঘা হতে পারে। এছাড়া খুব গরম খাবারও ক্ষত তৈরি করতে পারে।
  3. স্ট্রেস বা মানসিক চাপ: মানসিক চাপের কারণে শরীরের প্রতিরোধক ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায়, যার ফলে ঘা হতে পারে।
  4. ভিটামিন বা খনিজের অভাব: বিশেষত ভিটামিন B12, আয়রন, ফোলিক অ্যাসিড ইত্যাদির অভাবের কারণে গালে ঘা হতে পারে।
  5. বিষাক্ত খাদ্য বা অ্যালার্জি: কিছু খাবার যেমন আনারস, টমেটো, চকোলেট ইত্যাদি গালে ঘা তৈরি করতে পারে। কিছু মানুষের খাদ্য সংবেদনশীলতার কারণে এটি ঘটে।
  6. মৌখিক স্বাস্থ্য সমস্যা: দাঁত, ব্রেস বা মুখের অন্যান্য উপকরণ থেকেও গালে ক্ষত হতে পারে।
  7. ইনফেকশন বা ভাইরাস: মৌখিক হার্পিস (Herpes) বা অন্য ভাইরাসের কারণে গালে ঘা হতে পারে।
  8. হার্মোনাল পরিবর্তন: মহিলাদের মাসিক বা গর্ভাবস্থায় হার্মোনাল পরিবর্তনের কারণে গালে ঘা হতে পারে।

গালে ঘার লক্ষণ:

  • গালে ছোট সাদা বা হলুদ রঙের ঘা বা ক্ষত দেখা যাওয়া।
  • ঘা আক্রান্ত জায়গা রেড বা ফুলে থাকা।
  • খাবার বা পানীয় খাওয়ার সময় ব্যথা বা অস্বস্তি হওয়া।
  • কথা বলার সময় যন্ত্রণা বা ব্যথা অনুভব হওয়া।
  • ঘা বড় হলে বা দীর্ঘস্থায়ী হলে, মুখের ভিতরে আলসার বা ক্ষতের আকারে সমস্যা হতে পারে।

গালে ঘার প্রতিকার:

  1. স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া (যেমন ফলমূল, সবজি, ওটস, ডাল) এবং অতিরিক্ত মসলাযুক্ত, তিক্ত বা ঝাল খাবার পরিহার করা।
  2. মুখের স্বাস্থ্য বজায় রাখা: নিয়মিত দাঁত পরিষ্কার করা এবং মুখ ধোয়া। মুখের পরিষ্কার রাখা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করে।
  3. গরম পানি লবণ: গরম পানিতে এক চা চামচ লবণ মিশিয়ে গার্গল করা ঘা শুকাতে সহায়ক হতে পারে।
  4. মুখের অ্যান্টিসেপটিক ব্যবহার: অ্যান্টিসেপটিক মাউথওয়াশ বা গার্গল ব্যবহার করা।
  5. বিভিন্ন ঘরোয়া উপকরণ:
    • শহিদুল পাতা বা তুলসী পাতা: তুলসী পাতা চিবিয়ে খাওয়া বা ঘা উপরে লাগানো ঘা কমাতে সহায়তা করতে পারে।
    • বেকিং সোডা: এক চা চামচ বেকিং সোডা জল মিশিয়ে ঘা আক্রান্ত স্থানে লাগান।
  6. স্ট্রেস কমানো: মানসিক চাপ কমানোর জন্য যোগব্যায়াম বা ধ্যান করা এবং যথেষ্ট বিশ্রাম নেওয়া।
  7. প্রয়োজনীয় চিকিৎসা: ঘা যদি দীর্ঘস্থায়ী হয় বা অধিক যন্ত্রণাদায়ক হয়, তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। বিশেষত, যদি ঘা ইনফেকশনের কারণে হয়ে থাকে বা অন্য কোনো জটিলতার লক্ষণ দেখা যায়।

এটি যদি বারবার বা গুরুতর হয়ে থাকে, তবে সঠিক চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *