Best Homeo Doctor

কান ফোলা কি,কারন,লক্ষন,প্রতিকার

কান ফোলা সাধারণত কানের ভিতরে বা বাইরের অংশে প্রদাহ বা ফোলাভাব দেখা দেয়, যা কানে অস্বস্তি, ব্যথা এবং অন্যান্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এটি একাধিক কারণে হতে পারে এবং সাধারণত এটি কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা বা সংক্রমণের ফলস্বরূপ ঘটে।

কারণ:

কানের ফোলার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে কিছু সাধারণ কারণ হলো:

  1. কানের ইনফেকশন (Otitis externa বা Otitis media):
    • কানের বাইরের অংশ বা মধ্য কানের ইনফেকশন হলে কানে ফোলাভাব হতে পারে। ইনফেকশনটি ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস দ্বারা হতে পারে এবং এটি কানের ভিতরে বা বাইরের অংশে প্রদাহ সৃষ্টি করে।
  2. কানের ময়লা বা ওয়াক্স জমা:
    • কানে অতিরিক্ত ময়লা বা ওয়াক্স জমে গেলে, কানের ভিতর চাপ পড়তে পারে এবং কানে ফোলাভাব হতে পারে।
  3. অ্যালার্জি:
    • কানের ফোলাভাব অ্যালার্জির কারণে হতে পারে, বিশেষ করে যদি কানের ভিতরে বা বাইরের ত্বক অ্যালার্জির কারণে উত্তেজিত হয়ে থাকে। এটি চুলকানি এবং লালভাব সৃষ্টি করতে পারে।
  4. কানের আঘাত বা ট্রমা:
    • কানে আঘাত বা চাপ পড়লে (যেমন, কোনও দুর্ঘটনায় বা শক্তি দিয়ে কান স্পর্শ করা), কানের বাইরের অংশ ফোলতে পারে।
  5. স্কিন কন্ডিশন (যেমন একজিমা, সোরিয়াসিস):
    • ত্বকের সমস্যার কারণে যেমন একজিমা বা সোরিয়াসিস কানের বাইরে ফোলাভাব এবং প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে।
  6. ফোড়া বা পুস:
    • কানের বাইরের অংশে ফোড়া বা পুস জমে গেলে কানে ফোলাভাব হতে পারে, যা ব্যথা এবং জ্বালাভাব সৃষ্টি করতে পারে।
  7. সিনাস বা ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা:
    • ঠাণ্ডা, সর্দি বা সিনাস ইনফেকশনের কারণে কানে ফোলাভাব দেখা দিতে পারে, বিশেষ করে মধ্য কান (Otitis media) আক্রান্ত হলে।

লক্ষণ:

কান ফোলানোর কিছু সাধারণ লক্ষণ:

  • কানে ফোলাভাব বা স্ফীত অংশ।
  • কানে ব্যথা বা অস্বস্তি।
  • কানে চুলকানি বা জ্বালা।
  • কানে স্রাব বা পুঁজ বের হওয়া (যা ইনফেকশনের লক্ষণ হতে পারে)।
  • কানে শুনতে সমস্যা বা শোনার সমস্যা।
  • কানের বাইরের ত্বক লাল বা উত্তেজিত হওয়া।

প্রতিকার:

কানের ফোলাভাবের প্রতিকার মূলত এর কারণ অনুসারে পরিবর্তিত হয়। কিছু সাধারণ উপায় হলো:

  1. ইনফেকশন হলে:
    • অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ গ্রহণ করতে হতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী উপযুক্ত ওষুধ ব্যবহার করতে হবে।
    • ব্যথা কমানোর জন্য পেইনকিলার (যেমন প্যারাসিটামল) ব্যবহার করা যেতে পারে।
  2. কানে ময়লা জমে গেলে:
    • কানের ময়লা পরিষ্কার করার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কখনোই নিজে কানে কিছু ঢুকিয়ে পরিষ্কার করার চেষ্টা করবেন না, কারণ এতে আরও সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
  3. অ্যালার্জি হলে:
    • অ্যালার্জি প্রতিরোধী ওষুধ বা অ্যান্টিহিস্টামিন ব্যবহার করা।
    • কানের ভিতরে বা বাইরের অংশে অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া হলে সেগুলোর চিকিৎসা করা।
  4. ট্রমা বা আঘাত হলে:
    • যদি কানে আঘাত লাগে, তবে বরফ লাগিয়ে কানে ঠাণ্ডা প্রয়োগ করা যেতে পারে যাতে ফোলাভাব কমে। তবে গুরুতর আঘাতের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
  5. ফোড়া বা পুস:
    • ফোড়া বা পুস থাকলে, চিকিৎসকের পরামর্শে তা পরিষ্কার করা বা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নেওয়া।
    • কখনোই নিজে ফোড়া চাপ দিয়ে পুঁজ বের করার চেষ্টা করবেন না।
  6. ঠাণ্ডা বা সর্দি হলে:
    • ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা হলে, সর্দি বা ইনহেলারের চিকিৎসা নেওয়া যেতে পারে। কানের মধ্যবর্তী ইনফেকশন থাকলে তা চিকিৎসকের মাধ্যমে সঠিকভাবে চিকিৎসা করা প্রয়োজন।

যদি কানের ফোলাভাব একাধিক দিন স্থায়ী হয় বা এটি ব্যথা, জ্বালা বা অন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে থাকে, তবে দেরি না করে একজন কান, গলা ও নাক বিশেষজ্ঞ (ENT) এর সাথে পরামর্শ করা উচিত।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *