Best Homeo Doctor

কানে কম শোনা কি,কারন,লক্ষন,প্রতিকার

কানে কম শোনা হলো একটি শারীরিক অবস্থা যেখানে মানুষের শ্রবণ ক্ষমতা স্বাভাবিকের তুলনায় কমে যায়। এর ফলে ব্যক্তি সাধারণভাবে শব্দ শুনতে বা বোঝতে সমস্যা অনুভব করেন।

কারণ:

কানে কম শোনার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। কিছু সাধারণ কারণ:

  1. শব্দ দূষণ (Noise-induced hearing loss): উচ্চশব্দের পরিবেশে দীর্ঘ সময় থাকার কারণে কানের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যেমনঃ গান শোনা, যান্ত্রিক যন্ত্রপাতির আওয়াজ।

  2. কানের মোম জমা হওয়া (Earwax buildup): কানের মোম বেশি জমে গেলে এটি কানের পাত্রে বাধার সৃষ্টি করতে পারে, ফলে শোনার সমস্যা হতে পারে।

  3. কানের ইনফেকশন: ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা কানে ইনফেকশন হলে শ্রবণ ক্ষমতা কমে যেতে পারে। সাধারণত, মধ্যকর্ণের সংক্রমণ (Otitis media) এর ফলে এটা হতে পারে।

  4. বয়সজনিত সমস্যা (Presbycusis): বয়স বাড়ার সাথে সাথে শ্রবণ ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে যায়, যা সাধারণত ৫০ বছর বয়সের পর দেখা যায়।

  5. এফেক্টিভ কন্ডিশন (এন্টিভাইরাস বা কেমিক্যালস): কিছু ওষুধ যেমন কিছু অ্যান্টিবায়োটিক, কেমোথেরাপির কারণে কানের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে শ্রবণ ক্ষমতা কমতে পারে।

  6. টিউমার বা অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা: কানের পেছনে বা মধ্যকর্ণে টিউমার বা অন্য কোনো সমস্যা থাকলে শোনার সমস্যা দেখা দিতে পারে।

  7. হাইপারটেনশন (উচ্চ রক্তচাপ) বা ডায়াবেটিস: এই ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যাও কানের রক্তপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে শোনার সমস্যায় পরিণত হতে পারে।

লক্ষণ:

কানে কম শোনার কয়েকটি সাধারণ লক্ষণ হতে পারে:

  1. শব্দ ফাঁপা শোনা বা অসম্পূর্ণ শোনা: কিছু শব্দ স্পষ্ট শোনা যায় না।
  2. বারবার লোকদের কাছ থেকে কথাগুলো বুঝতে সমস্যা হওয়া: মানুষের কথা স্পষ্ট শোনা যায় না বা শুনতে খুব কঠিন লাগে।
  3. শব্দে অস্বস্তি বা ভারসাম্যহীনতা অনুভব করা: মাথা ঘোরা বা ভারসাম্য হারানোর অনুভূতি হতে পারে (এটি কানের ইনফেকশন বা আঘাতের কারণে হতে পারে)।
  4. উচ্চস্বরে শুনতে চাওয়া: অন্যদের কাছে বারবার শব্দ জিজ্ঞেস করা বা উচ্চস্বরে শোনা প্রয়োজন।

প্রতিকার:

  1. চিকিৎসকের পরামর্শ: যদি দীর্ঘ সময় ধরে কানে কম শোনার সমস্যা থাকে, তবে ENT (কান, নাক, গলা) বিশেষজ্ঞের কাছে পরামর্শ নেয়া উচিত।

  2. কানের মোম পরিষ্কার করা: কানের মোম বেশি জমে গেলে বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে পরিষ্কার করিয়ে নিতে হবে। মোম জমলে এটি শ্রবণশক্তি কমিয়ে দেয়।

  3. কানের ইনফেকশন চিকিৎসা করা: যদি কানে ইনফেকশন থাকে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক বা অন্যান্য চিকিৎসা নিতে হবে।

  4. শ্রবণ যন্ত্র (Hearing Aids): বয়সজনিত বা অন্যান্য কারণে শোনার সমস্যা থাকলে শ্রবণ যন্ত্র ব্যবহার করতে হতে পারে, যা কানে শোনার ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।

  5. শব্দ দূষণ থেকে দূরে থাকা: উচ্চশব্দ থেকে কানে ক্ষতি হতে পারে, তাই বেশি উচ্চস্বরে গান শোনা বা যান্ত্রিক শোরগোল থেকে দূরে থাকা উচিত। হেডফোন ব্যবহার করলে শব্দের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।

  6. স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন: উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস বা অন্যান্য শারীরিক সমস্যার কারণে শ্রবণ সমস্যা হলে এগুলোর সঠিক চিকিৎসা নিন এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন অনুসরণ করুন।

  7. ব্যায়াম এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাস: রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে নিয়মিত ব্যায়াম করা এবং সুষম খাবার খাওয়া শ্রবণ ক্ষমতা ভালো রাখতে সাহায্য করতে পারে।

যদি এই সমস্যা দীর্ঘমেয়াদী বা গুরুতর হয়, তবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *