Best Homeo Doctor

কর্ণ ব্রণ কি,কারন,লক্ষন,প্রতিকার

কর্ণ ব্রণ (Ear Acne) হলো কানের ভিতর বা বাইরের অংশে ব্রণ বা পিম্পল হওয়া। এটি সাধারণত কানের শোঁকার টিউব বা কানের বাইরের অংশে ঘটতে পারে। এটি ত্বকের পোরগুলির ব্লক হয়ে বা তেল ও ময়লা জমে সিস্ট বা ব্রণ তৈরি হওয়ার ফলে ঘটে।

কারণ:

কর্ণ ব্রণের প্রধান কারণগুলো হতে পারে:

  1. তেল বা ময়লা জমা:
    • কানে অতিরিক্ত তেল বা ময়লা জমে গেলে, এটি ত্বকের পোরগুলোকে ব্লক করে এবং ব্রণ সৃষ্টি হতে পারে। যাদের ত্বকে অতিরিক্ত তেল তৈরী হয়, তাদের কানে ব্রণ হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
  2. কানের অস্বাস্থ্যকর পরিষ্কার বা ব্যবহারের অভ্যাস:
    • কানে বেশি আঙুল বা অন্য কিছু প্রবেশ করানো, কানে বেশি সাবান ব্যবহার করা বা অতিরিক্ত পরিষ্কার করার ফলে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে এবং ব্রণ হতে পারে।
  3. অ্যালার্জি:
    • কানে ব্রণ হওয়া কখনো কখনো অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া হিসেবেও ঘটতে পারে, বিশেষত সারা দিনে সানস্ক্রিন বা কানের পরিচ্ছন্নতা বজায় না রাখলে।
  4. হরমোনাল পরিবর্তন:
    • হরমোনের পরিবর্তনের কারণে ত্বকে অতিরিক্ত তেল উৎপাদিত হতে পারে, যা ব্রণের সৃষ্টি করে। বিশেষ করে পুরুষদের এবং মহিলাদের মাসিক চক্রের সময় বা গর্ভাবস্থায় হরমোনের কারণে কানে ব্রণ হতে পারে।
  5. কানের গহনা ব্যবহার:
    • কিছু মানুষের কানে ইয়ার রিং, হুপ বা অন্যান্য গহনা পরলে কানের ত্বকে উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে, যা ব্রণ সৃষ্টি করে।
  6. গরম এবং আর্দ্র পরিবেশ:
    • গরম এবং আর্দ্র পরিবেশে অতিরিক্ত ঘাম ও তেল উৎপাদন বাড়তে পারে, যা ব্রণ সৃষ্টি করতে পারে।

লক্ষণ:

কর্ণ ব্রণের কিছু সাধারণ লক্ষণ:

  • কানে অস্বস্তি বা ব্যথা: কানে ব্রণ হলে সেখানে অস্বস্তি বা ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
  • কানে লালচে বা ফুলে থাকা: কানের ব্রণগুলিতে লালচে হয়ে ফুলে যেতে পারে।
  • প্রথমে ছোট লাল ফোস্কা: ব্রণ সাধারণত প্রথমে ছোট লাল ফোস্কা বা পিম্পল হিসাবে দেখা দেয়।
  • রঙের পরিবর্তন: কিছু সময়, ব্রণ গুলি পুঁজ (pus) সহ সাদা বা হলুদ রঙে পরিবর্তিত হতে পারে।
  • কানে চুলকানি বা ত্বকের ক্ষত: ব্রণগুলিতে চুলকানি বা ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

প্রতিকার:

কর্ণ ব্রণের জন্য কিছু সহজ প্রতিকার রয়েছে:

  1. স্বচ্ছ পরিষ্কার ত্বক রাখা:
    • কানে বা কানের বাইরের অংশে পরিষ্কার রাখতে হবে এবং বেশি তেল জমতে না দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। প্রতিদিন কানের বাইরের অংশে হালকা সাবান বা ক্লিনজিং ব্যবহার করা যেতে পারে।
  2. পিম্পল ক্রিম বা জেল ব্যবহার:
    • কানে ব্রণ হলে ব্রণ কমানোর জন্য সাধারণত সালিসাইলিক অ্যাসিড বা বেনজয়েল পারঅক্সাইড ভিত্তিক ক্রিম বা জেল ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে, কানের ভিতরে ব্যবহারের আগে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
  3. কানের গহনা পরিধান কমানো:
    • কানে গহনা পরলে ত্বক আরো বেশি খারাপ হতে পারে। তাই কানের গহনা পরিধান কমানো বা কিছু সময়ের জন্য না পরা ভালো।
  4. ব্রণ সরানোর জন্য হালকা ম্যাসাজ:
    • ব্রণ জায়গায় এক্সফোলিয়েটিং স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে এটি খুব বেশি শক্তভাবে না করা ভালো, যাতে ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
  5. সঠিক হাইজিন মেনে চলা:
    • কানের ভিতরের অংশ বা বাইরের অংশে ময়লা, ঘাম বা তেল জমতে না দেওয়ার জন্য নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।
  6. প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার:
    • কিছু প্রাকৃতিক উপাদান যেমন চা গাছের তেল, এলোভেরা বা হলুদ কানের ব্রণের ওপর প্রয়োগ করলে তা উপকারে আসতে পারে।
  7. ব্রণ কমানোর জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া:
    • যদি ব্রণগুলি দীর্ঘস্থায়ী হয়ে যায় বা গুরুতর আকারে প্রকাশ পায়, তবে একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ বা ENT চিকিৎসক থেকে পরামর্শ নিতে হবে। বিশেষত যদি কানের ভিতরে ব্রণ হয় বা পুঁজ ফেলে, তখন এটি এক্সটার্নাল ক্যানাল ইনফেকশনের লক্ষণ হতে পারে।

সতর্কতা:

  • কানে ব্রণ হলে কখনোই আঙুল বা অন্য কোনো বস্তু দিয়ে ব্রণটি নষ্ট করতে চেষ্টা করবেন না। এটি কানের ইনফেকশন বা অন্যান্য সমস্যা তৈরি করতে পারে।
  • কানে ব্রণ দীর্ঘদিন স্থায়ী হলে বা সমস্যা বাড়লে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এভাবে আপনি কানে ব্রণ প্রতিরোধ এবং চিকিৎসা করতে পারেন।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *