Best Homeo Doctor

অভিমানী বা স্পর্শকাতর কারন,লক্ষন,প্রতিকার

অভিমানী বা স্পর্শকাতর ব্যক্তি এমন একজন, যিনি খুব সহজে অন্যের কথায় বা আচরণে অনুভূত হতে পারেন এবং তাদের মনে ক্ষোভ বা দুঃখ জন্মাতে পারে। এই ধরনের মানুষরা নিজেদের বা অন্যদের সম্পর্কে খুব সংবেদনশীল এবং সবার প্রতি তাদের উচ্চ প্রত্যাশা থাকে। তারা খুব তাড়াতাড়ি আহত বা মন খারাপ হতে পারে, এমনকি ছোট্ট বিষয়ও তাদের মনে বিরক্তি বা দুঃখ সৃষ্টি করতে পারে।

অভিমানী/স্পর্শকাতর হওয়ার কারণ:

  1. আত্মবিশ্বাসের অভাব: আত্মবিশ্বাসের অভাব থাকলে, মানুষ মনে করে অন্যরা তার প্রতি খারাপ মন্তব্য করছে, যা স্পর্শকাতরতার সৃষ্টি করতে পারে।
  2. অত্যাধিক মূল্যায়ন বা প্রত্যাশা: কখনো কখনো মানুষ খুব বেশি প্রত্যাশা বা মনোভাব ধারণ করে, যা যদি পূর্ণ না হয়, তাহলে অভিমানী বা স্পর্শকাতর হয়ে পড়তে পারে।
  3. ভয় বা অনিশ্চয়তা: কোনো বিষয়ে নিশ্চিত না থাকা বা ভবিষ্যতের প্রতি ভয় থাকলে, মানুষ সহজেই ক্ষুব্ধ বা হতাশ হয়ে পড়ে।
  4. বাচ্চাবেলা বা পরিবারের পরিবেশ: পরিবারের পরিবেশ যদি খুব অনুভূতিপ্রবণ হয় বা অতিরিক্ত সুরক্ষিত থাকে, তবে শিশুরা বড় হয়ে স্পর্শকাতর হয়ে উঠতে পারে।
  5. আগের অভিজ্ঞতা বা আঘাত: অতীতে কোনো গভীর দুঃখ বা আঘাতের অভিজ্ঞতা থাকলে, সেই অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি এড়াতে মানুষ অতিরিক্ত সংবেদনশীল বা অভিমানী হয়ে ওঠে।
  6. মানসিক বা শারীরিক স্বাস্থ্য সমস্যা: কোনো মানসিক অবস্থা, যেমন: উদ্বেগ, হতাশা বা হতাশাজনক পরিবেশ স্পর্শকাতরতা বৃদ্ধি করতে পারে।
  7. সম্পর্কের সমস্যা: সম্পর্কের মধ্যে যে কোনো ধরনের অশান্তি বা অসম্পূর্ণতা স্পর্শকাতরতা সৃষ্টি করতে পারে।

অভিমানী/স্পর্শকাতর হওয়ার লক্ষণ:

  1. অতি সহজে আঘাত পাওয়া: কোনো মন্তব্য বা আচরণ তার মনে দুঃখ বা বিরক্তি সৃষ্টি করা, এমনকি কিছুটা মজা বা খারাপ মন্তব্যও তাকে কষ্ট দিতে পারে।
  2. অভিযোগ বা অভিযোগ করা: অন্যের কথা বা আচরণের জন্য সঠিক বা ভুলভাবে অভিযোগ করা।
  3. আত্মগ্লানির অনুভূতি: নিজের দুর্বলতা বা অপরাধবোধের অনুভূতি, যা তাকে আরও বেশি অভিমানী বা স্পর্শকাতর করে তোলে।
  4. অবহেলা বা প্রত্যাখ্যানের অনুভূতি: নিজেকে অবহেলিত বা প্রত্যাখ্যাত অনুভব করা, যখন অন্যরা তাদের প্রতি যথাযথ মনোযোগ দেয় না।
  5. অতিরিক্ত মনোযোগের প্রত্যাশা: সব সময় অন্যদের কাছ থেকে মনোযোগ এবং সমর্থন চাওয়া, এবং যদি তা না পাওয়া যায় তবে অবসন্নতা বা অভিমানী অনুভূতি হতে পারে।
  6. মুখ বন্ধ করে রাখা বা দূরে চলে যাওয়া: নিজের অনুভূতি প্রকাশ না করে মনের মধ্যে রেখে দেওয়া এবং এক সময় অবসন্ন বা দূরে থাকা।

অভিমানী/স্পর্শকাতর হওয়ার প্রতিকার:

  1. আত্মবিশ্বাস তৈরি করা: নিজের প্রতি আস্থা বৃদ্ধি করা, এবং নিজের শক্তি এবং সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে সচেতন হওয়া।
  2. অনুভূতি প্রকাশ করা: নিজের অনুভূতি ও মতামত সোজাসুজি এবং নির্মলভাবে ব্যক্ত করা, যাতে অন্যরা বুঝতে পারে এবং ভুল বোঝাবুঝি কমে।
  3. পজিটিভ চিন্তা করা: প্রতিটি পরিস্থিতি থেকে ইতিবাচক কিছু খুঁজে বের করার চেষ্টা করা এবং নেতিবাচক চিন্তা থেকে দূরে থাকা।
  4. ক্ষমা করা: অন্যদের ভুল বোঝা বা আহত হওয়ার পর তাদের ক্ষমা করা এবং মনের ভার হালকা রাখা।
  5. পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করা: যেকোনো মন্তব্য বা আচরণ থেকে অনুভূতির সাথে যুক্ত না হয়ে শান্তভাবে পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করা।
  6. যোগাযোগ দক্ষতা উন্নয়ন: অন্যদের সঙ্গে পরিষ্কারভাবে কথা বলা এবং আবেগ নিয়ন্ত্রণের জন্য যোগাযোগের দক্ষতা বাড়ানো।
  7. মানসিক প্রশান্তি: ধ্যান, যোগব্যায়াম বা শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করার মাধ্যমে মানসিক শান্তি বজায় রাখা।

অভিমানী বা স্পর্শকাতর হওয়া এক ধরনের মানসিক অবস্থা, তবে এর সমাধান পাওয়া সম্ভব যদি সচেতনভাবে নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং ইতিবাচক মনোভাব গ্রহণ করা হয়।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *