Best Homeo Doctor

পিত্তথলিতে পাথর কি,কারন,লক্ষন,প্রতিকার

পিত্তথলিতে পাথর (Gallstones) হল পিত্তথলির মধ্যে কঠিন পদার্থ যা সাধারণত পিত্ত বা বাইল (liver থেকে নিঃসৃত এক ধরনের তরল) থেকে তৈরি হয়। পিত্তথলি হলো এক ধরনের অঙ্গ যা লিভারের নিচে থাকে এবং পিত্ত সংরক্ষণ করে রাখে, যা পরবর্তীতে পাচনতন্ত্রে খাদ্য পরিপাক প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে।

পিত্তথলিতে পাথরের কারণ:

পিত্তথলিতে পাথর তৈরি হওয়ার প্রধান কারণগুলো হলো:

  1. পিত্তের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল: পিত্তথলিতে কোলেস্টেরল বেশি হওয়ার ফলে তা কঠিন হয়ে পাথরে পরিণত হতে পারে।
  2. পিত্তের কম পরিমাণে সল্ট: পিত্তের সল্টের পরিমাণ কম হলে পিত্তে সঙ্কুচিত কণিকা (Crystals) জমে পাথরে পরিণত হতে পারে।
  3. হরমোন পরিবর্তন: প্রেগন্যান্সি, জন্মনিরোধক বড়ি, এবং বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
  4. অতিরিক্ত ওজন: স্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজনের কারণে পিত্তথলিতে পাথর তৈরি হতে পারে।
  5. ডায়াবেটিস: ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
  6. বয়স এবং লিঙ্গ: ৪০ বছরের বেশি বয়সী মহিলাদের পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বেশি। পুরুষের তুলনায় মহিলাদের মধ্যে পিত্তথলির পাথর বেশি দেখা যায়।
  7. জীবনযাত্রা এবং খাদ্যাভ্যাস: অতিরিক্ত মাংস বা তেলের খাবার খাওয়ার অভ্যাস, কম ফাইবারযুক্ত খাবার, বা অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাসও পিত্তথলির পাথর সৃষ্টি করতে পারে।

লক্ষণ:

পিত্তথলির পাথরের লক্ষণগুলি সাধারণত নীচের মতো:

  1. পেটের ডান দিকের ব্যথা: বিশেষত খাবারের পর, বিশেষ করে চর্বিযুক্ত খাবারের পর, পেটে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হয়। ব্যথা পিত্তথলি বা পাকস্থলীর দিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
  2. পিত্তথলির প্রদাহ: পিত্তথলি প্রদাহিত হলে, তীব্র ব্যথা এবং গা-গা হয়ে যাওয়ার অনুভূতি হতে পারে।
  3. হজমের সমস্যা: গ্যাস, অম্বল, পেট ফোলা, বা অস্বস্তি।
  4. পিত্তবর্ণ পরিবর্তন: প্রস্রাবের রঙ গা dark ় বা হলুদ হতে পারে এবং মল অধিক হালকা রঙের হতে পারে।
  5. বমি বমি ভাব: খাওয়ার পর বমি বমি ভাব এবং বমি হতে পারে।
  6. হঠাৎ জ্বর: পিত্তথলির পাথর সংক্রমিত হলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে।

প্রতিকার:

পিত্তথলির পাথরের চিকিৎসা নিম্নলিখিতভাবে করা যায়:

  1. ওষুধ: কিছু ক্ষেত্রে পিত্তথলির পাথরের আকার ছোট হলে, চিকিৎসক কিছু ওষুধ প্রদান করতে পারেন যা পাথরগুলো দ্রবীভূত করতে সাহায্য করে। তবে, এটা সব সময় কার্যকর হয় না।
  2. অপারেশন (Cholecystectomy): পিত্তথলির পাথরের সবচেয়ে কার্যকরী চিকিৎসা হলো পিত্তথলি অপসারণ করা। এটি সাধারণত ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি (লেজারের মাধ্যমে) করা হয় এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে সফল হয়।
  3. ডায়েট কন্ট্রোল: স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, যেমন কম চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া এবং ফাইবারযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া, পিত্তথলির পাথর হওয়া রোধ করতে সাহায্য করতে পারে। নিয়মিত সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।
  4. প্রাকৃতিক প্রতিকার: কিছু মানুষ প্রাকৃতিক উপাদান যেমন, লেবুর রস, অলিভ অয়েল বা অ্যাপল সাইডার ভিনেগার ব্যবহার করতে পারে, তবে এগুলি শুধুমাত্র প্রাথমিক অবস্থায় কার্যকর হতে পারে।

তবে, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো প্রকার ঘরোয়া চিকিৎসা করা উচিত নয়। যদি পিত্তথলির পাথরের লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে তাড়াতাড়ি ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

 

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *