Best Homeo Doctor

হার্ণিয়া কি,কারন,লক্ষন,প্রতিকার

হার্ণিয়া (Hernia) হল এমন একটি শারীরিক অবস্থা, যেখানে শরীরের কোনো অঙ্গ বা অংশ তার স্বাভাবিক স্থানে না থেকে অন্য কোথাও বেরিয়ে যায় বা অবশিষ্ট অংশের মধ্য দিয়ে বের হয়ে আসে। সাধারণত, পেটের পেশীর মধ্যে একটি দুর্বল জায়গা থাকে, যেখানে অন্ত্র (intestines) বা অন্য কোনো অঙ্গ বেরিয়ে যেতে পারে। হার্ণিয়া বিভিন্ন ধরনের হতে পারে এবং এটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি করতে পারে, তাই চিকিৎসকের সহায়তা প্রয়োজন।

কারণ:

  1. পেশী দুর্বলতা:
    • পেটের পেশীতে দুর্বল জায়গা তৈরি হলে, সাধারণত শারীরিক পরিশ্রম বা চাপের কারণে (যেমন: অত্যধিক ভার উত্তোলন) হার্ণিয়া হতে পারে।
  2. অতিরিক্ত শারীরিক চাপ:
    • অতিরিক্ত কাশি, কোষ্ঠকাঠিন্য, বা দীর্ঘ সময় ধরে ভারী কিছু তোলা (যেমন: ভার উত্তোলন) হার্ণিয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।
  3. আনফিট পেশী বা টিস্যু:
    • জন্মগতভাবে পেটের পেশী দুর্বল হলে, জন্মের পর থেকেই হার্ণিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকতে পারে।
  4. বয়স:
    • বয়স বাড়ার সঙ্গে পেশী দুর্বল হয়ে যায়, ফলে হার্ণিয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
  5. অতিরিক্ত ওজন:
    • স্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজনের কারণে পেটের পেশীতে চাপ পড়ে, যা হার্ণিয়ার কারণ হতে পারে।
  6. গর্ভাবস্থা:
    • গর্ভাবস্থায় পেটের পেশীতে চাপ পড়ে, যা হার্ণিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
  7. দুর্ঘটনা বা আঘাত:
    • দুর্ঘটনায় আঘাত পাওয়া বা অস্ত্রোপচার থেকে পেটের পেশীতে ক্ষতি হওয়া হার্ণিয়া সৃষ্টি করতে পারে।

লক্ষণ:

  1. বাইরে বের হওয়া গুটি বা চাকা:
    • পেট বা অন্যান্য অংশের চারপাশে একটি গোলাকার বা বাঁকা শলাকার আকারের বলের মতো গুটি বা চাকা দেখা যেতে পারে। এটি চাপ দিলে বা হাসলে আরও স্পষ্ট হতে পারে।
  2. পেটের ব্যথা বা অস্বস্তি:
    • হার্ণিয়া হওয়ার স্থানে ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভূত হতে পারে, বিশেষত চাপ বা শারীরিক পরিশ্রমের সময়।
  3. পেট ফেঁপে যাওয়া বা ফুলে যাওয়া:
    • পেটের ভিতরে বা চারপাশে ফেঁপে যাওয়া বা ফুলে যাওয়ার মতো অনুভূতি হতে পারে।
  4. মাথা ঘোরা বা বমি ভাব:
    • যদি হার্ণিয়া খুব বড় হয়, তাহলে মাঝে মাঝে মাথা ঘোরা বা বমি ভাব দেখা দিতে পারে।
  5. মলত্যাগ বা প্রস্রাবের সমস্যা:
    • হার্ণিয়া বিশেষভাবে পেটে বা মূত্রথলীর কাছে হলে মলত্যাগ বা প্রস্রাবের সমস্যা হতে পারে।

প্রতিকার:

  1. চিকিৎসক পরামর্শ:
    • হার্ণিয়া হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। চিকিৎসক রোগের ধরণ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রস্তাব করবেন।
  2. সার্জারি (অস্ত্রোপচার):
    • বেশিরভাগ হার্ণিয়ার ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হয়। অস্ত্রোপচার করে বের হয়ে যাওয়া অংশকে আবার সঠিক জায়গায় স্থাপন করা হয় এবং পেশী বা টিস্যু মেরামত করা হয়।
  3. পেটের পেশী শক্ত করা:
    • হার্ণিয়ার ঝুঁকি কমানোর জন্য পেটের পেশী শক্ত করতে যোগব্যায়াম বা শরীরচর্চা করতে হবে। তবে কিছু ধরনের যোগব্যায়াম হার্ণিয়া রোগীদের জন্য উপকারী হলেও, সেগুলি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে করা উচিত।
  4. ওজন কমানো:
    • অতিরিক্ত ওজন কমানো হার্ণিয়ার ঝুঁকি কমাতে সহায়ক হতে পারে।
  5. ভারী কাজ থেকে বিরত থাকা:
    • ভারী কিছু তোলার সময় পেটের উপর চাপ পরতে পারে, তাই ভারী কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।
  6. ধীরে ধীরে শারীরিক পরিশ্রম করা:
    • শারীরিক পরিশ্রমের সময় সাবধানে কাজ করতে হবে, যাতে হার্ণিয়া হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।

হার্ণিয়া প্রতিরোধের টিপস:

  • অতিরিক্ত খাবার খাওয়া বা পানি পান করলে পেটের উপর চাপ সৃষ্টি হতে পারে, তাই নিয়মিত ও পরিমিত খাবার খাওয়া।
  • যে কোনও শারীরিক পরিশ্রমের আগে ভালভাবে প্রস্তুতি নেওয়া এবং সঠিক পদ্ধতিতে কাজ করা।
  • কাশি বা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় দ্রুত চিকিৎসা নেয়া, কারণ এগুলোও হার্ণিয়া সৃষ্টি করতে পারে।

হার্ণিয়া সাধারণত সহজেই চিকিৎসা করা যায় যদি প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়ে, তবে এটি সময়মতো চিকিৎসা না করা হলে গুরুতর জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *