Best Homeo Doctor

স্তন টিউমার কি,কারন,লক্ষন,প্রতিকার

স্তন টিউমার হলো স্তনের মধ্যে কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি বা গঠন যা স্তনের যে কোনও অংশে হতে পারে। এটি benign (ভাল) বা malignant (মন্দ) হতে পারে। সাধারণভাবে, স্তন টিউমার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে benign (ভাল) হয়, তবে কিছু ক্ষেত্রে এটি ক্যান্সারে পরিণত হতে পারে।

স্তন টিউমার (Benign Malignant) এর কারণ:

স্তন টিউমার হওয়ার সঠিক কারণ স্পষ্ট নয়, তবে কিছু ঝুঁকির কারণ থাকতে পারে, যেমন:

  1. হরমোনের পরিবর্তন: মহিলাদের স্তন টিউমার হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হরমোনের পরিবর্তন। এটি সাধারণত প্রজননকালীন বা মেনোপজের পরের সময়ে ঘটে।
  2. জেনেটিক কারণ: কিছু মহিলার ক্ষেত্রে পারিবারিক ইতিহাস বা জেনেটিক কারণে স্তনে টিউমার হতে পারে।
  3. বয়স: বয়সের সঙ্গে স্তন টিউমারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তবে, ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সের মধ্যে মহিলাদের মধ্যে benign স্তন টিউমার দেখা দিতে পারে।
  4. ধূমপান অ্যালকোহল সেবন: অতিরিক্ত ধূমপান এবং অ্যালকোহল সেবন স্তন টিউমারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
  5. অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: অতিরিক্ত চর্বি বা প্রসেসড খাদ্য খাওয়ার কারণে স্তন টিউমারের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
  6. অতিরিক্ত শারীরিক ওজন: অতিরিক্ত শারীরিক ওজন বা স্থূলতার কারণে স্তন টিউমারের ঝুঁকি বাড়ে।
  7. অতিরিক্ত বিকিরণ: অতিরিক্ত বিকিরণ বা রেডিয়েশন টেস্ট (যেমন, এক্স-রে) এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবও স্তন টিউমার হতে পারে।

স্তন টিউমার (Benign Malignant) এর লক্ষণ:

স্তন টিউমারের লক্ষণ কিছুটা আলাদা হতে পারে, তবে কিছু সাধারণ লক্ষণ হলো:

  1. স্তনে স্ফীতি বা গুটি: সাধারণত একটি স্ফীত গুটি দেখা যেতে পারে যা চাপ দিলে নরম বা শক্ত হতে পারে।
  2. ব্যথা বা অস্বস্তি: কিছু মহিলার ক্ষেত্রে স্তন টিউমার ব্যথার কারণ হতে পারে, যদিও অধিকাংশ benign টিউমারে ব্যথা থাকে না।
  3. স্তনের আকৃতিতে পরিবর্তন: স্তনটিতে আকৃতির পরিবর্তন হতে পারে, বিশেষত কোন একটি স্তন অন্যটি থেকে বড় বা ছোট হয়ে গেলে।
  4. ত্বকের পরিবর্তন: স্তনের ত্বকে কোনও রঙের পরিবর্তন, গোলকধাঁধা বা শুষ্কতার অনুভূতি।
  5. রক্ত বা পুঁজ স্রাব: স্তন থেকে কোনো ধরনের রক্তপাত বা পুঁজ আসা।
  6. নিপল থেকে নিঃসরণ: স্তনের নিপল থেকে সাদা, হলুদ বা রক্তাক্ত নিঃসরণ হতে পারে।

স্তন টিউমার (Benign Malignant) এর প্রতিকার:

  1. Benign (ভাল) স্তন টিউমারের চিকিৎসা:

Benign স্তন টিউমার সাধারণত তেমন বিপজ্জনক নয় এবং অনেক ক্ষেত্রেই চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না, তবে কিছু পরিস্থিতিতে:

  • অপারেশন: টিউমারের আকার বড় হলে অথবা রোগীর সমস্যা সৃষ্টি করলে, অস্ত্রোপচার করে টিউমারটি অপসারণ করা হতে পারে।
  • নিরীক্ষণ: নিয়মিত মেডিক্যাল পরীক্ষার মাধ্যমে টিউমারটির বৃদ্ধি বা পরিবর্তন দেখা হয়।
  • পেইন ম্যানেজমেন্ট: যদি টিউমারের কারণে ব্যথা হয়, তাহলে চিকিৎসক উপযুক্ত ব্যথানাশক ওষুধ দিতে পারেন।
  1. Malignant (মন্দ) স্তন টিউমারের চিকিৎসা:

Malignant স্তন টিউমার বা স্তন ক্যান্সার-এর চিকিৎসা সাধারণত আগ্রাসী হয় এবং বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়:

  • সার্জারি (অপারেশন): ক্যান্সার আক্রান্ত স্তন বা টিউমারের অংশ অপসারণ করা হতে পারে।
  • কেমোথেরাপি: কেমোথেরাপি ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি টিউমারের আকার ছোট করতে বা ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে সাহায্য করে।
  • রেডিওথেরাপি: ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি কমাতে রেডিওথেরাপি ব্যবহার করা হয়।
  • হরমোনথেরাপি: কিছু স্তন ক্যান্সার হরমোনের কারণে বৃদ্ধি পায়, সেক্ষেত্রে হরমোন থেরাপি ব্যবহার করা হতে পারে।
  • ইমিউনোথেরাপি: শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সক্রিয় করার জন্য ইমিউনোথেরাপি ব্যবহৃত হতে পারে।

প্রতিরোধ:

  1. স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন: সুষম খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, ধূমপান ও অ্যালকোহল পরিহার স্তন টিউমারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
  2. নিয়মিত স্তন পরীক্ষা: স্তনের স্বাভাবিক গঠন এবং পরিবর্তন বুঝে নেওয়ার জন্য নিয়মিত স্ব-পরীক্ষা করা উচিত। এছাড়াও, চিকিৎসকের পরামর্শে বার্ষিক স্তন স্ক্যান বা mammogram করানো উচিত, বিশেষত ৪০ বছর বয়সের পর।
  3. গর্ভধারণ স্তন্যদান: গর্ভধারণ এবং স্তন্যদান স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে, কারণ এই সময় হরমোনের প্রভাব কমে যায়।
  4. পৃথকভাবে স্তনের কোষ পরীক্ষা: স্তনে টিউমারের কোন পরিবর্তন দেখা দিলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করা জরুরি।

শেষ কথা:

যদি স্তনে কোনো গুটি বা অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়, তা হলে অবিলম্বে একজন চিকিৎসকের কাছে পরামর্শ নেওয়া উচিত। প্রাথমিক পর্যায়ে স্তন টিউমার বা স্তন ক্যান্সার শনাক্ত করলে চিকিৎসা অনেক সহজ এবং কার্যকর হতে পারে।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *