Best Homeo Doctor

সাইটিকা কি,কারন,লক্ষন,প্রতিকার

সাইটিকা (Sciatica) হলো স্নায়ুজনিত এক ধরনের ব্যথা, যা সাইটিক স্নায়ুতে হয়। সাইটিক স্নায়ু আমাদের শরীরের সবচেয়ে বড় স্নায়ু, যা মেরুদণ্ডের নিচ থেকে পা পর্যন্ত চলে। যখন এই স্নায়ুতে চাপ বা প্রদাহ হয়, তখন তা তীব্র ব্যথার কারণ হতে পারে, যা সাইটিকার ব্যথা হিসেবে পরিচিত।

কারণ:

সাইটিকার ব্যথা হওয়ার প্রধান কারণগুলি হলো:

  1. ডিস্ক হার্নিয়া: মেরুদণ্ডের ডিস্কে কোনো ফাঁকা জায়গা তৈরি হলে বা ডিস্ক চাপ পড়লে সাইটিক স্নায়ুতে চাপ পড়তে পারে, যা ব্যথার কারণ হয়।
  2. স্পন্ডাইলোসিস: মেরুদণ্ডের হাড়ের ক্ষয় বা গতি হারানো, যা সাইটিক স্নায়ুর ওপর চাপ সৃষ্টি করে।
  3. মেরুদণ্ডের সংক্রমণ বা আঘাত: মেরুদণ্ডে কোনো আঘাত, প্রদাহ বা সংক্রমণ সাইটিক স্নায়ুকে আঘাত করে।
  4. পেশী টান বা শক্ত হয়ে যাওয়া: পেশী বা লিগামেন্টে অতিরিক্ত টান বা চাপ পড়লে সাইটিক স্নায়ু চাপের মধ্যে চলে যায়।
  5. অতিরিক্ত ওজন বা শরীরের অস্বাভাবিক ভঙ্গি: অতিরিক্ত ওজন বা ভুল ভঙ্গিতে বসা বা দাঁড়ানো, যা সাইটিক স্নায়ুকে চাপ দিতে পারে।

লক্ষণ:

সাইটিকার ব্যথার সাধারণ লক্ষণগুলো হলো:

  1. পিছনে ব্যথা: সাইটিকা সাধারণত কোমরের নিচের দিকে শুরু হয় এবং পায়ের পিছনের দিক পর্যন্ত ছড়াতে পারে।
  2. পা অবশ বা অসাড় হয়ে যাওয়া: সাইটিকা পায়ে অবশ ভাব সৃষ্টি করতে পারে।
  3. প্রতিবন্ধকতা বা শিরশির অনুভূতি: পায়ে শিরশির, খিচুনি বা অতিরিক্ত টান অনুভব করা।
  4. ব্যথার তীব্রতা বৃদ্ধি: দীর্ঘ সময় বসে থাকলে বা হঠাৎ চলাফেরা করার সময় ব্যথা বৃদ্ধি পেতে পারে।
  5. হাঁটতে সমস্যা হওয়া: সাইটিকা ব্যথার কারণে হাঁটতে বা দাঁড়াতে অসুবিধা হতে পারে।

প্রতিকার:

সাইটিকার ব্যথা কমানোর জন্য কিছু সাধারণ প্রতিকার:

  1. বিশ্রাম: দীর্ঘ সময় এক জায়গায় বসে বা দাঁড়িয়ে থাকার বদলে বিশ্রাম নেওয়া প্রয়োজন। তবে, সম্পূর্ণ বিশ্রাম দীর্ঘ সময় নেওয়া উচিত নয়, কারণ এতে পেশী দুর্বল হতে পারে।
  2. গরম এবং ঠান্ডা সেঁক: ব্যথার স্থানে গরম বা ঠান্ডা সেঁক দেওয়ার মাধ্যমে ব্যথা ও প্রদাহ কমানো যেতে পারে। প্রথমে ঠান্ডা এবং পরে গরম সেঁক প্রয়োগ করা যেতে পারে।
  3. পেইন কিলার: সাধারণ পেইন কিলার যেমন প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন সাইটিকার ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে। তবে, এগুলি ডাক্তারের পরামর্শে ব্যবহার করা উচিত।
  4. ফিজিওথেরাপি: বিশেষ ব্যায়াম বা স্ট্রেচিং মাধ্যমে সাইটিকার ব্যথা কমানো যেতে পারে। ফিজিওথেরাপিস্টের নির্দেশনায় ব্যায়াম করা প্রয়োজন।
  5. ইনজেকশন বা স্টেরয়েড: যদি ব্যথা গুরুতর হয় এবং অন্য কোন চিকিৎসা উপকারী না হয়, তবে সাইটিক স্নায়ুর কাছে স্টেরয়েড ইনজেকশন নেওয়া হতে পারে।
  6. চলাফেরা বা ব্যায়াম: নিয়মিত হাঁটা, পিলেটস বা যোগব্যায়াম ব্যথা কমাতে সহায়ক হতে পারে। তবে ভারী কাজ বা শারীরিক চাপ থেকে বিরত থাকা উচিত।
  7. শারীরিক অবস্থান উন্নয়ন: সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখা, যেমন সোজা বসা, দাঁড়িয়ে থাকা বা চলাফেরা করা সাইটিকার ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।

যদি সাইটিকার ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা খুব তীব্র হয়, তাহলে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। চিকিৎসক উপযুক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে সঠিক চিকিৎসার পরামর্শ দিতে পারবেন।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *