Best Homeo Doctor

শীর্ণতা কি,কারন,লক্ষন,প্রতিকার

শীর্ণতা (Underweight) হলো এমন একটি শারীরিক অবস্থা যেখানে একজন ব্যক্তি তার উচ্চতা অনুযায়ী স্বাভাবিক ওজনের তুলনায় অনেক কম ওজনের অধিকারী হন। এটি সাধারণত শরীরের পুষ্টির অভাব, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, কিংবা কোন রোগের কারণে হতে পারে। শীর্ণতার কারণে শরীরের শক্তির অভাব, ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং সাধারণ দৈনন্দিন কার্যক্রমে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

শীর্ণতার কারণ:

১. অপর্যাপ্ত খাদ্য গ্রহণ: খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ কম হওয়া বা পুষ্টির অভাব শীর্ণতার অন্যতম কারণ। 2. দীর্ঘস্থায়ী অসুখ বা ব্যাধি: যেকোনো দীর্ঘস্থায়ী রোগ (যেমন: ক্যান্সার, যকৃতের সমস্যা, ম্যালেরিয়া, ডায়াবেটিস, থাইরয়েড সমস্যা ইত্যাদি) শরীরের ওজন কমিয়ে দিতে পারে। 3. মানসিক চাপ বা উদ্বেগ: মানসিক চাপ, উদ্বেগ বা হতাশা থেকে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন হতে পারে, ফলে শরীরের ওজন কমে যায়। 4. বয়স: বৃদ্ধ বয়সে শরীরের মেটাবলিজম রেট পরিবর্তিত হয় এবং শরীরের মাংসপেশি দুর্বল হতে পারে, যার কারণে ওজন কমে যেতে পারে। 5. তীব্র শারীরিক পরিশ্রম: অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম বা শারীরিক কসরত করার ফলে শরীরের প্রয়োজনীয় শক্তি ও পুষ্টি ব্যবহার হয়ে যায়। 6. জিনগত কারণে: কিছু মানুষের জিনগতভাবে কম ওজন থাকতে পারে, যাদের শরীরের মেটাবলিজম দ্রুত কাজ করে এবং তাদের ওজন বাড়াতে সমস্যা হয়।

শীর্ণতার লক্ষণ:

১. নির্জীবতা বা ক্লান্তি: শক্তির অভাবে শরীরে নিস্তেজতা এবং ক্লান্তি অনুভূত হতে পারে। 2. হাড় বেরিয়ে আসা: শরীরের হাড় সহজেই দৃশ্যমান হতে পারে, বিশেষ করে হাড়ের কাছাকাছি স্থান যেমন- পাঁজরের জায়গা, কাঁধ ইত্যাদি। 3. কম শক্তি: দৈনন্দিন কাজকর্ম করতে শরীরের শক্তির অভাব। 4. দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা বা রোগ প্রতিরোধের দুর্বলতা: শীর্ণ ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে এবং তারা সহজে অসুস্থ হয়ে পড়েন। 5. বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হওয়া: যেমন অনিয়মিত মাসিক, হরমোনাল সমস্যা, চুল পড়া ইত্যাদি। 6. মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা: অবসাদ, উদ্বেগ, আত্মবিশ্বাসের অভাব, বা মানসিক অবস্থা খারাপ হতে পারে।

শীর্ণতার প্রতিকার:

১. প্রতিরোধমূলক খাদ্যাভ্যাস: বেশি ক্যালোরি ও পুষ্টির উৎসে খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। পুষ্টিকর খাবারের মধ্যে প্রোটিন, চর্বি, সুষম কার্বোহাইড্রেট ও ভিটামিন এবং খনিজসমূহের পরিমাণ বাড়ানো প্রয়োজন। উদাহরণস্বরূপ, দুধ, মাংস, ডিম, বাদাম, শসা, সবজি, স্যুপ, ফলমূল ইত্যাদি।

  1. অন্তর্ভুক্ত করা শক্তির খাবার: খাদ্যাভ্যাসে অতিরিক্ত স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং প্রোটিন যোগ করা, যেমন- অয়েল, মাখন, গরুর মাংস, মিষ্টি আলু ইত্যাদি।
  2. মনে রাখুন স্ন্যাকিং: ছোট ছোট খাবারের মাধ্যমে সারা দিন পুষ্টি গ্রহণ করা।
  3. ভিটামিন খনিজ সাপ্লিমেন্ট: প্রয়োজনীয় ভিটামিন (বিশেষ করে ভিটামিন D, B12, C) এবং খনিজ (জিঙ্ক, আয়রন) সম্পূরক গ্রহণ করা।
  4. শারীরিক পরিশ্রম: যদি ওজন বাড়াতে হয়, তবে কিছু শারীরিক কার্যকলাপ যেমন ওয়েট লিফটিং বা হালকা যোগব্যায়াম শরীরের পেশী তৈরি করে এবং ওজন বাড়াতে সহায়তা করতে পারে।
  5. বিশেষজ্ঞ পরামর্শ: যদি শীর্ণতা গুরুতর হয়ে থাকে, তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। বিশেষ করে যদি কোনো শারীরিক সমস্যা বা অসুস্থতার কারণে শীর্ণতা হয়ে থাকে, তবে সেই সমস্যা সমাধানে চিকিৎসা নিতে হবে।
  6. মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া: যদি মানসিক অবস্থা (যেমন, উদ্বেগ, হতাশা, ইত্যাদি) শীর্ণতার কারণ হয়ে থাকে, তাহলে কাউন্সেলিং বা মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

উল্লেখযোগ্য যে, শীর্ণতার প্রতিকার সবার জন্য একরকম হবে না, কারণ বিভিন্ন ব্যক্তির শরীরের ধরন এবং শারীরিক অবস্থান আলাদা। তাই সঠিক ডায়েট ও চিকিৎসার পরামর্শ নেওয়া উচিত।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *