মুত্রমেহ (Urinary Incontinence) হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে ব্যক্তি নিজে ইচ্ছা না করে প্রস্রাব (মূত্র) ত্যাগ করেন। এটি প্রায়শই নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণে ঘটে। মুত্রমেহ বিভিন্ন কারণে হতে পারে এবং এর বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ থাকতে পারে।
মুত্রমেহের কারণসমূহ:
- অধিক মূত্রত্যাগের প্রবণতা: যেমন পানির পরিমাণ বাড়ানো বা মূত্রাশয়ের সংক্রমণ।
- মূত্রাশয়ের দুর্বলতা: মূত্রাশয়ের পেশি দুর্বল হলে এটি মুত্রমেহ সৃষ্টি করতে পারে।
- বয়সজনিত পরিবর্তন: বয়স বাড়ার সাথে সাথে মূত্রাশয়ের কার্যকারিতা কমে যেতে পারে।
- প্রেগন্যান্সি: গর্ভাবস্থায় মূত্রাশয়ে চাপ পড়তে পারে এবং এতে মুত্রমেহ হতে পারে।
- প্রস্রাবের সংক্রমণ: মূত্রনালী বা মূত্রাশয়ের সংক্রমণও মুত্রমেহের কারণ হতে পারে।
- মানসিক চাপ বা স্ট্রেস: অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা উদ্বেগের কারণে মুত্রমেহ হতে পারে।
- হরমোনাল পরিবর্তন: যেমন মেনোপজের সময় হরমোনের পরিবর্তন মুত্রমেহের কারণ হতে পারে।
মুত্রমেহের লক্ষণসমূহ:
- প্রস্রাব ত্যাগের নিয়ন্ত্রণ হারানো: হঠাৎ প্রস্রাব ত্যাগ হয়ে যাওয়া।
- স্ট্রেনিং বা চাপের সময় প্রস্রাব ত্যাগ: হাঁচি, কাশির সময়, বা ভারী কিছু তোলার সময় প্রস্রাব ত্যাগ হতে পারে।
- দিন বা রাতে মুত্রমেহ: দিনের যেকোনো সময় অথবা রাতে প্রস্রাব ত্যাগ হতে পারে।
- প্রস্রাবের অতি চাপ: কখনো কখনো প্রবল চাপে প্রস্রাব ত্যাগ হতে পারে।
মুত্রমেহের প্রতিকার:
- প্রশিক্ষণ ও কেগেল ব্যায়াম: মূত্রাশয়ের পেশি শক্তিশালী করার জন্য কেগেল ব্যায়াম করা।
- জল কম খাওয়া: অতিরিক্ত পানি বা তরল কম খাওয়া, বিশেষ করে রাতের সময়।
- ডাক্তারী পরামর্শ: মুত্রমেহের কারণে যদি সংক্রমণ বা অন্য কোনও গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে, তবে ডাক্তারী পরামর্শ নিতে হবে।
- ওজন কমানো: অতিরিক্ত ওজন মূত্রাশয়ে চাপ সৃষ্টি করতে পারে, তাই স্বাভাবিক ওজন বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
- এন্টি–কোলিনার্জিক ওষুধ: কিছু ক্ষেত্রে ডাক্তার ওষুধ লিখে দিতে পারেন যা মূত্রাশয়ের কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করতে পারে।
মুত্রমেহ যদি দীর্ঘমেয়াদী হয়, তবে চিকিৎসক দ্বারা পরীক্ষা এবং পরামর্শ নেওয়া উচিত।