Best Homeo Doctor

ভেরিকোসিল কি,কারন,লক্ষন,প্রতিকার

ভেরিকোসিল (Varicocele) হল পুরুষদের একটি চিকিৎসাগত অবস্থা, যেখানে অণ্ডকোষের (scrotum) ভিতরে রক্তনালীগুলি স্ফীত বা ফুলে যায়। এটি মূলত অণ্ডকোষের ভেনাস রক্তনালীতে অস্বাভাবিক রক্ত প্রবাহের কারণে ঘটে। ভেরিকোসিল সাধারণত একটি অস্বস্তিকর অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে এবং পুরুষদের মধ্যে অণ্ডকোষের সমস্যা, এমনকি পুরুষের উর্বরতা (ফার্টিলিটি) এর উপরও প্রভাব ফেলতে পারে।

ভেরিকোসিলের কারণ:

ভেরিকোসিল সাধারণত যখন অণ্ডকোষের রক্তনালীগুলির শিরাগুলির ভ্যালভগুলো কাজ করতে ব্যর্থ হয়, তখন সেগুলি স্ফীত হতে শুরু করে। সাধারণ কারণগুলির মধ্যে:

  1. রক্তনালীর ভ্যালভ সমস্যাগুলি: যেগুলি রক্তকে সঠিকভাবে ফিরে আসতে সাহায্য করে, যখন সেগুলি খোলামেলা থাকে বা সঠিকভাবে কাজ করে না, তখন রক্ত সঞ্চালন বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং শিরাগুলি ফুলে যায়।
  2. উচ্চ চাপ বা শারীরিক চাপ: দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকা বা ভারী বস্তু উত্তোলন করার ফলে শিরায় অতিরিক্ত চাপ পড়ে এবং রক্তনালী ফুলে যায়।
  3. অণ্ডকোষের গঠনের অস্বাভাবিকতা: কিছু পুরুষের অণ্ডকোষের রক্তনালী গঠনের দিক থেকে অন্যদের চেয়ে আলাদা হতে পারে, যার ফলে ভেরিকোসিলের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  4. বংশগত কারণ: পরিবারে ভেরিকোসিলের ইতিহাস থাকলে, তার ঝুঁকি বাড়তে পারে।

ভেরিকোসিলের লক্ষণ:

ভেরিকোসিল কিছু ক্ষেত্রে কোনও লক্ষণ তৈরি নাও করতে পারে (এটি সাধারণত একটি নিরব অবস্থা)। তবে কিছু সাধারণ লক্ষণ হল:

  1. অণ্ডকোষে ব্যথা বা অস্বস্তি: মৃদু বা মাঝারি ব্যথা হতে পারে, বিশেষ করে দাঁড়িয়ে থাকার সময় বা অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রমের পর।
  2. অণ্ডকোষে স্ফীতি বা ফোলাভাব: ভেরিকোসিলের কারণে অণ্ডকোষের আশেপাশে শিরাগুলি ফুলে যেতে পারে, যা হালকা বা গা dark ় রঙের হতে পারে।
  3. যন্ত্রণা বৃদ্ধি: বেশিরভাগ সময়, ব্যথা অল্প এবং ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। এটি আড়ালেও চলে যেতে পারে, কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে চাপ বা উত্তোলন করলে ব্যথা বাড়তে পারে।
  4. অণ্ডকোষের সাইজে পরিবর্তন: ভেরিকোসিলের কারণে অণ্ডকোষের আকার পরিবর্তিত হতে পারে, সাধারণত ফোলা বা আলাদা অনুভূতি দেখা যায়।
  5. প্রজনন ক্ষমতার সমস্যা: কিছু ক্ষেত্রে, ভেরিকোসিল প্রজনন সমস্যা তৈরি করতে পারে, যেমন শুক্রাণুর সংখ্যা বা গুণমানের সমস্যা।

ভেরিকোসিলের প্রতিকার:

  1. লাইফস্টাইল পরিবর্তন:
    • ভারী বস্তু উত্তোলন না করা বা দীর্ঘ সময় এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকা এড়ানো।
    • শারীরিক চাপ বা পরিশ্রমের সময় বিশ্রাম নেওয়া।
  2. ব্যথানাশক ওষুধ: ব্যথা কমানোর জন্য সাধারণত অ-স্টেরয়েডাল এন্টি-ইনফ্লেমেটরি ড্রাগ (NSAIDs) যেমন প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন ব্যবহার করা যেতে পারে।
  3. স্ক্রোটাল সাপোর্ট: অণ্ডকোষকে সহায়তা করার জন্য বিশেষ স্ক্রোটাল সাপোর্ট বা ট্রাঙ্ক ব্যবহার করা যেতে পারে, যা ব্যথা এবং অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করে।
  4. সার্জারি: যদি ভেরিকোসিল গুরুতর হয়ে ওঠে বা প্রজনন ক্ষমতা নিয়ে সমস্যা তৈরি করে, তবে সার্জারি হতে পারে। এটি সাধারণত একটি ছোট অস্ত্রোপচার যা স্ফীত রক্তনালী বন্ধ করার মাধ্যমে করা হয়। সার্জারি দুটি প্রকারে করা যেতে পারে:
    • মাইক্রোস্কোপিক সার্জারি: এই পদ্ধতিতে, ছোট করে কাটা হয় এবং অন্ডকোষের স্ফীত রক্তনালী অপসারণ করা হয়।
    • ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি: এর মাধ্যমে রক্তনালী বন্ধ করার জন্য ছোট ছোট কাটা দিয়ে মেশিনের মাধ্যমে শিরাগুলি সংশোধন করা হয়।
  5. এন্ডোভাসকুলার থেরাপি: আধুনিক চিকিৎসায়, এই পদ্ধতিতে একটি ক্যাথেটার ব্যবহৃত হয় রক্তনালীতে ঢুকিয়ে সেগুলিকে বন্ধ করে দেওয়া হয়।

নোট: ভেরিকোসিল যদি প্রজনন সমস্যা সৃষ্টি করে বা ব্যথা বাড়ায়, তবে ডাক্তারী পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি অপারেশন ছাড়া নিয়ন্ত্রণযোগ্য হলেও, কিছু ক্ষেত্রে সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *