Best Homeo Doctor

ভূমিষ্ঠ হয়ে না কাঁদা কি,কারন,লক্ষন,প্রতিকার

ভূমিষ্ঠ হয়ে না কাঁদা (Failure to Cry at Birth) হলো একটি পরিস্থিতি যেখানে শিশুটি জন্মের পর স্বাভাবিকভাবে কাঁদে না। জন্মের পর শিশুদের সাধারণত কাঁদা খুব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি তাদের শ্বাসপ্রশ্বাসের শুরু এবং শারীরিক সুস্থতার একটি নির্দেশক। যদি শিশুটি ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর কাঁদতে না পারে, তাহলে এটি সাধারণত কোনো ধরনের শারীরিক বা শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা বা অস্বাভাবিকতা নির্দেশ করতে পারে, যা দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন।

ভুমিষ্ঠ হয়ে না কাঁদার কারণ:

  1. শ্বাসকষ্ট বা শ্বাসনালী বন্ধ হওয়া (Respiratory Distress):
    • কিছু শিশুর জন্মের সময় শ্বাসনালীতে রক্ত, মিউকাস বা অন্যান্য উপাদান আটকে যেতে পারে, যা তাদের শ্বাস নিতে বাধা দেয় এবং কাঁদতে অসুবিধা তৈরি করে।
  2. অস্তিত্বহীন শ্বাসপ্রশ্বাস (Apgar Score Low):
    • কিছু সময় জন্মের পর শিশুদের অ্যাপগার স্কোর (Apgar Score) কম হতে পারে, যার মানে শিশুর শ্বাসকষ্ট বা শরীরের কার্যক্ষমতা ঠিকভাবে কাজ করছে না।
  3. প্রারম্ভিক জন্ম (Preterm Birth):
    • প্রারম্ভিক জন্ম হলে শিশুর ফুসফুস সম্পূর্ণভাবে পরিপক্ক হতে পারে না, ফলে তাদের শ্বাস নিতে সমস্যা হতে পারে এবং তারা কাঁদতে নাও পারে।
  4. হৃদরোগ বা জন্মগত সমস্যা:
    • কিছু শিশুর জন্মগত হৃদরোগ থাকতে পারে, যা তাদের শ্বাস বা শারীরিক কার্যক্রমে সমস্যা তৈরি করতে পারে এবং কাঁদতে না পেরে ভূমিষ্ঠ হতে পারে।
  5. নিউরোলজিক্যাল সমস্যা (Neurological Issues):
    • মস্তিষ্ক বা স্নায়ুতন্ত্রের কোনো সমস্যা থাকলে শিশুর শরীরের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া এবং কাঁদা বা শ্বাস নেওয়ার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
  6. জন্মকালীন আঘাত (Birth Injury):
    • গর্ভাবস্থার সময় কোনো কারণে শিশুর শরীরের কোনো অংশে আঘাত হতে পারে (যেমন মস্তিষ্ক বা স্নায়ুতে আঘাত), যা শিশুর কাঁদতে বা শ্বাস নিতে সমস্যা তৈরি করতে পারে।
  7. দীর্ঘ সময় পর জন্ম (Delayed Birth):
    • যদি শিশুর জন্মে অনেক সময় লেগে যায় বা কিছু সময় অপেক্ষা করতে হয়, তবে শিশুর শরীরে অক্সিজেনের অভাব হতে পারে, যা কাঁদা বা স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসে প্রভাব ফেলতে পারে।

ভুমিষ্ঠ হয়ে না কাঁদার লক্ষণ:

  1. শিশুর মুখ বা শরীর সাদাটে বা নীল হওয়া:
    • যদি শিশুটি জন্মের পর শ্বাস নিতে না পারে, তার মুখ বা শরীর সাদাটে বা নীল হয়ে যেতে পারে, এটি শ্বাসকষ্ট বা অক্সিজেনের অভাবের ইঙ্গিত।
  2. শিশুর কোনো প্রতিক্রিয়া না থাকা:
    • শিশুটি জন্মের পর কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া না দেখালে, যেমন চোখ খুলে না দেখা বা কাঁদা না, এটি গুরুতর সমস্যা হতে পারে।
  3. স্মৃতিহীনতা বা শ্বাসের অভাব:
    • শিশুর দেহের কোনো অংশে বা মুখে নীলচে ভাব দেখা দিতে পারে, যা শ্বাসের অভাব বা অক্সিজেনের অভাব নির্দেশ করে।
  4. অত্যাধিক মিউকাস বা রক্ত বের হওয়া:
    • যদি শিশুর শ্বাসনালীতে অতিরিক্ত মিউকাস বা রক্ত থাকে, তখন শ্বাস নিতে সমস্যা হতে পারে এবং শিশুটি কাঁদতে নাও পারে।

ভুমিষ্ঠ হয়ে না কাঁদার প্রতিকার:

  1. অ্যাপগার স্কোর মূল্যায়ন:
    • জন্মের পর শিশুর অ্যাপগার স্কোর দ্রুত মূল্যায়ন করা উচিত। অ্যাপগার স্কোর শিশুর শারীরিক অবস্থা এবং তার শ্বাস-প্রশ্বাসের কার্যকারিতা নির্দেশ করে।
  2. শ্বাস নেওয়ার সহায়তা:
    • যদি শিশুটি শ্বাস নিতে না পারে, তাহলে শ্বাসের সহায়তা প্রয়োজন। ভেন্টিলেশন বা অক্সিজেনের মাধ্যমে শিশুকে শ্বাস নিতে সহায়তা দেওয়া হতে পারে।
  3. মুখের বা শ্বাসনালীর পরিষ্কারকরণ:
    • শ্বাস নালীতে কোনো ব্লক বা মিউকাস জমে থাকলে এটি পরিষ্কার করা যেতে পারে। শিশুর শ্বাসকষ্ট দূর করতে চিকিৎসকরা সুষম শ্বাসপ্রশ্বাসের সহায়তা বা শ্বাসনালী পরিষ্কার করতে পারেন।
  4. হৃদযন্ত্রের সহায়তা:
    • যদি শিশুর হৃদপিণ্ড ধীরে ধীরে কাজ করে বা কোনো জন্মগত হৃদরোগ থাকে, তবে তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হতে পারে, যেমন হৃদযন্ত্রের সহায়তা বা সার্জারি।
  5. পেডিয়াট্রিক সহায়তা:
    • যদি শিশুর জন্মের সময় কোনো ধরনের সমস্যা হয়, যেমন মস্তিষ্কের সমস্যা বা জন্মকালীন আঘাত, তবে শিশু বিশেষজ্ঞদের বা পেডিয়াট্রিকের পরামর্শ নিতে হবে। তারা শিশুর জন্য সঠিক চিকিৎসা ব্যবস্থা নির্ধারণ করবেন।
  6. জন্মের পর তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা:
    • জন্মের পর যদি শিশুর কাঁদা না শুনে থাকে, তবে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা শুরু করা উচিত, যেমন অক্সিজেনের সহায়তা, শ্বাসপ্রশ্বাসের সহায়তা বা অন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা।
  7. নিউরোলজিক্যাল বা হার্টের সমস্যা:
    • যদি কোনো নিউরোলজিক্যাল বা হার্টের সমস্যা থাকে, তবে তা নির্ণয় করতে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা এবং চিকিৎসা করতে হবে।

শেষ কথা:

শিশু যদি ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর কাঁদতে না পারে, তবে তা একটি গুরুতর অবস্থার ইঙ্গিত হতে পারে, যার জন্য দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন। বাবা-মা এবং চিকিৎসকদের উচিত শিশুটির শ্বাস-প্রশ্বাস এবং শারীরিক অবস্থা দ্রুত মূল্যায়ন করে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া। কোন সন্দেহ থাকলে, শিশুর জন্য অবিলম্বে চিকিৎসকের সাহায্য নেওয়া উচিত।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *