Best Homeo Doctor

ভগন্দর কি,কারন,লক্ষন,প্রতিকার

ভগন্দর (Fistula) হল একটি অস্বাভাবিক যোগাযোগ বা টিউবের মতো পথ যা দুটি শারীরিক গহ্বর বা অঙ্গকে একে অপরের সাথে সংযুক্ত করে। সাধারণত এটি মলদ্বার বা মলদ্বারের আশেপাশে ঘটে এবং এটি মলদ্বার থেকে শরীরের অন্যান্য অংশে বা অন্য কোন শারীরিক অংশের সাথে সংযোগ তৈরি করে। এটি বিভিন্ন কারণে হতে পারে এবং এটি সাধারণত একটি অসুখ বা শারীরিক সমস্যা।

ভগন্দরের কারণ:

  1. মলদ্বারে ইনফেকশন: অনেক ক্ষেত্রেই মলদ্বারের সংক্রমণ বা abscess (পুঁজভর্তি ফোসকা) থেকে ভগন্দর তৈরি হতে পারে। এটি মলদ্বারের শ্লেষ্মা ঝিল্লি বা ত্বকের আঘাত থেকে সৃষ্টি হয়।
  2. পাইলস (হেমোরয়েডস): হেমোরয়েডস বা পাইলস থেকেও মলদ্বারের আশেপাশে ভগন্দর হতে পারে, যদি সেখানে পুঁজ জমে এবং ফেটে যায়।
  3. অপারেশন বা অস্ত্রোপচার: কিছু ক্ষেত্রে, মলদ্বারে অস্ত্রোপচারের পর বা অন্য কোনো চিকিৎসা কারণে ভগন্দর তৈরি হতে পারে।
  4. ক্রনিক ইনফ্লামেটরি বাওয়েল ডিজিজ (IBD): যেমন ক্রোনস ডিজিজ বা কলাইটিস—যে রোগগুলির কারণে অন্ত্রের প্রদাহ হয়, সেগুলিও ভগন্দরের কারণ হতে পারে।
  5. টিউমার বা ক্যান্সার: মলদ্বারে বা আশেপাশে টিউমার থাকলে তাও ভগন্দর সৃষ্টি করতে পারে।
  6. যৌন রোগ: যৌন সংক্রমণ বা যৌনভাবে সংক্রমিত রোগও (STIs) মলদ্বারের আশেপাশে বা অন্যান্য শারীরিক অংশে ভগন্দর সৃষ্টি করতে পারে।
  7. টিবি: মলদ্বারে টিউবারকুলোসিস (টিবি) আক্রান্ত হলে সেটিও ভগন্দর সৃষ্টি করতে পারে।

ভগন্দরের লক্ষণ:

  1. মলদ্বারে বা আশেপাশে ব্যথা বা অস্বস্তি: ভগন্দর থেকে গন্ধযুক্ত পুঁজ বা মল বের হতে পারে, যা ব্যথার কারণ হতে পারে।
  2. রক্তপাত: কখনও কখনও, ভগন্দর থেকে রক্তপাত হতে পারে, বিশেষ করে মলদ্বারের সঙ্গে সম্পর্কিত ভগন্দরের ক্ষেত্রে।
  3. পুঁজ বা স্রাব: মলদ্বারের কাছ থেকে গন্ধযুক্ত পুঁজ বা স্রাব বের হতে পারে, যা অত্যন্ত অস্বস্তিকর এবং ব্যথাদায়ক হতে পারে।
  4. ফোলাভাব: ভগন্দর কারণে মলদ্বারের আশেপাশে ফোলা বা প্রদাহ হতে পারে।
  5. গন্ধ: পুঁজ বা স্রাবের কারণে অস্বাভাবিক গন্ধ হতে পারে।
  6. মলত্যাগের সময় ব্যথা: মলত্যাগের সময় মলদ্বারের ভিতরে বা আশেপাশে ব্যথা অনুভূত হতে পারে।

ভগন্দরের প্রতিকার:

  1. অ্যান্টিবায়োটিক থেরাপি: যদি ভগন্দর ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের কারণে হয়, তবে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ প্রয়োজন হতে পারে।
  2. অপারেশন বা সার্জারি: অধিকাংশ ক্ষেত্রে, ভগন্দর ঠিক করার জন্য অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হয়। অপারেশনের মাধ্যমে সংক্রমণ বা ভগন্দর বন্ধ করা হয়।
    • ফিস্টুলোটমি: এটি ভগন্দরকে অপসারণ করার জন্য একটি সাধারণ অস্ত্রোপচার, যেখানে মলের পথ বা টিউব কেটে ফেলা হয়।
    • ফিস্টুলোটপ্লাস্টি: কিছু ক্ষেত্রে, ভগন্দর সারাতে এই প্রক্রিয়া করা হয়, যাতে ফিস্টুলা বন্ধ করা যায় এবং সাধারণভাবে পুনরুদ্ধার করা যায়।
  3. এন্টিইনফ্ল্যামেটরি ড্রাগস: প্রদাহ কমাতে ও ব্যথা উপশম করতে এন্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ড্রাগস ব্যবহার করা যেতে পারে।
  4. গরম পানি বা সিটস বাথ: মলদ্বারের জন্য গরম পানিতে স্নান বা সিটস বাথ ব্যথা এবং অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
  5. কোর্স অব সাইটস: কয়েকটি বিশেষ চিকিত্সা যেমন সাইটস থেরাপি (Sitz bath), যা পেটের তলদেশের আরাম প্রদান করে, ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে।
  6. পৃথক সঠিক ডায়েট: ভগন্দর থেকে সেরে উঠতে একটি সুষম খাদ্যাভ্যাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও পানি থাকে, যাতে কোষ্ঠকাঠিন্য এড়ানো যায়।

সার্বিক পরামর্শ:

ভগন্দর একেবারে শুরুর দিকে চিকিৎসা না করলে এটি আরও গুরুতর হতে পারে এবং জীবনযাত্রায় বড় ধরনের সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই যেকোনো ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *