Best Homeo Doctor

ব্লাড ক্যান্সার কি,কারন,লক্ষন,প্রতিকার

ব্লাড ক্যান্সার (Leukemia) হচ্ছে রক্তে এক ধরনের ক্যান্সার যা রক্তের শ্বেত রক্তকণিকা বা অন্যান্য রক্ত কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং বিস্তারের কারণে ঘটে। এটি রক্ত এবং হাড়ের মজ্জা (bone marrow) সংক্রান্ত ক্যান্সার, যেখানে রক্তের কোষ স্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায় না এবং অবাধে বৃদ্ধি পেতে থাকে। ব্লাড ক্যান্সার সাধারণত লিউকেমিয়া, লিম্ফোমা, এবং মাইলোমা নামক বিভিন্ন ধরণের হতে পারে।

কারণ:

ব্লাড ক্যান্সারের সঠিক কারণ স্পষ্টভাবে জানা না গেলেও কিছু সাধারণ কারণ এবং ঝুঁকি রয়েছে:

  1. জেনেটিক কারণ: পূর্বে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ক্যান্সারের ইতিহাস থাকলে, তার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
  2. রেডিয়েশন: অতিরিক্ত রেডিয়েশন এক্সপোজারের কারণে ব্লাড ক্যান্সার হতে পারে, বিশেষত পারমাণবিক বিপর্যয় বা এক্সরে রেডিয়েশনের জন্য।
  3. কেমিক্যাল এক্সপোজার: কিছু কেমিক্যাল, যেমন বেনজিন, ব্লাড ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
  4. ভাইরাস সংক্রমণ: কিছু ভাইরাস যেমন হিউম্যান টেলোমিরাস ভাইরাস (HTLV-1) এবং ইপস্টেইনবার ভাইরাস রক্তের ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।
  5. ইমিউন সিস্টেমের দুর্বলতা: কিছু রোগ যেমন এইচআইভি/এইডস বা ইমিউন সিস্টেমে দুর্বলতা থাকা মানুষের মধ্যে ব্লাড ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি।

লক্ষণ:

ব্লাড ক্যান্সারের কিছু সাধারণ লক্ষণ নিচে দেওয়া হলো:

  1. অবসাদ বা ক্লান্তি: অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভব করা, যেটি বিশ্রাম নেওয়ার পরেও কাটে না।
  2. ফুলে ওঠা (swelling): গলায়, অণ্ডকোষ বা পেটে ফোলা দেখা দিতে পারে।
  3. শরীরে দাগ বা রক্তক্ষরণ: হালকা আঘাতেও রক্তক্ষরণ হতে পারে এবং ত্বকে দাগ বা রক্তচাপের দাগ দেখা যেতে পারে।
  4. গা dark রক্তমিশ্রিত প্রস্রাব বা মল: রক্তের উপস্থিতি।
  5. বমি বা বমি বমি ভাব: খাওয়ার পর বমি বা বমি বমি ভাব।
  6. ওজন হ্রাস: অস্বাভাবিকভাবে ওজন কমে যাওয়া।
  7. জ্বর: দীর্ঘস্থায়ী জ্বর বা ঠান্ডা লেগে থাকা।
  8. হাড় বা জয়েন্টে ব্যথা: হাড় বা জয়েন্টে অস্বাভাবিক ব্যথা বা অস্বস্তি।
  9. হালকা বা পাতলা ত্বক: শরীরের ত্বক অনিরাপদ বা পাতলা হয়ে যেতে পারে।

প্রতিকার:

ব্লাড ক্যান্সারের চিকিৎসা বিভিন্ন উপায়ে করা যেতে পারে, যা রোগের ধরণ, পর্যায় এবং রোগীর শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী নির্ধারিত হয়।

  1. কেমোথেরাপি: ক্যান্সারের কোষগুলো ধ্বংস করতে কেমোথেরাপি ব্যবহৃত হয়। এটি এক ধরনের শক্তিশালী ঔষধের থেরাপি।
  2. অস্ত্রোপচার (Bone Marrow Transplantation): রোগী যদি হাড়ের মজ্জায় (bone marrow) রক্ত উৎপাদন করতে না পারে, তবে হাড়ের মজ্জার প্রতিস্থাপন (বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট) করা হতে পারে।
  3. রেডিয়েশন থেরাপি: কিছু বিশেষ ক্যান্সারে রেডিয়েশন থেরাপি ব্যবহার করা হতে পারে, যার মাধ্যমে ক্যান্সারের কোষগুলিকে ধ্বংস করা হয়।
  4. টার্গেটেড থেরাপি: এই থেরাপিতে ক্যান্সারের কোষে বিশেষভাবে লক্ষ্য করা ঔষধ ব্যবহার করা হয়।
  5. ইমিউনোথেরাপি: শরীরের নিজস্ব প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ইমিউনোথেরাপি ব্যবহৃত হয়।
  6. স্টেম সেল থেরাপি: নতুন এবং সুস্থ কোষ তৈরি করার জন্য স্টেম সেল থেরাপি ব্যবহার করা হতে পারে।

কোনো উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাওয়া এবং যথাযথ চিকিৎসা নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্লাড ক্যান্সারের প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *