Best Homeo Doctor

বুকজ্বলা কি,কারন,লক্ষন,প্রতিকার

বুকজ্বলা (Heartburn) বা অ্যাসিড রিফ্লাক্স হলো এক ধরনের অস্বস্তি যা বুকের মাঝখানে, গলার কাছে এবং কখনও কখনও পেটে অনুভূত হয়। এটি সাধারণত অতি অ্যাসিডিক বা হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড (গ্যাস্ট্রিক অ্যাসিড) খাদ্যনালীতে ফিরে আসার কারণে ঘটে। বুকজ্বলা কখনও কখনও গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ (GERD) নামক দীর্ঘস্থায়ী অবস্থার অন্তর্গত হতে পারে।

কারণ:

  1. অতিরিক্ত অ্যাসিড উৎপাদন: খাদ্যনালীর নিচের অংশে অ্যাসিডের অতিরিক্ত উৎপাদন বুকজ্বলা সৃষ্টি করতে পারে।
  2. খাদ্যাভ্যাস: অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার, চর্বিযুক্ত খাবার, ক্যাফেইন, চকলেট, টমেটো, সাইট্রাস ফল, মদ্যপান ইত্যাদি বুকজ্বলা সৃষ্টি করতে পারে।
  3. ওজন বৃদ্ধি বা স্থূলতা: পেটের উপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি হলে গ্যাস্ট্রিক অ্যাসিড খাদ্যনালীতে ফিরে আসতে পারে।
  4. গর্ভাবস্থা: গর্ভাবস্থায় হরমোনাল পরিবর্তন এবং পেটের উপর চাপ বুকজ্বলা সৃষ্টি করতে পারে।
  5. ধূমপান: ধূমপান খাদ্যনালীর সুষম কার্যকারিতা নষ্ট করে এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্স বাড়ায়।
  6. অনিয়মিত খাবার গ্রহণ বা অতিরিক্ত খাওয়া: অতিরিক্ত খাবার খাওয়া বা খাবার দ্রুত গ্রহণও বুকজ্বলা সৃষ্টি করতে পারে।

লক্ষণ:

  • বুকের মাঝখানে জ্বালা বা তাপ অনুভূতি: এটি সাধারণত খাওয়ার পর বা শোয়ার সময় বেশি অনুভূত হয়।
  • গলার মধ্যে অস্বস্তি বা ঝাঁঝালো অনুভূতি: অনেক সময় গলার কাছে জ্বালাপোড়া বা তিক্ত স্বাদ অনুভূত হতে পারে।
  • তিনিও গ্যাস এবং পেটের অস্বস্তি: বুকজ্বলার সঙ্গে পেট ফাঁপা, গ্যাস এবং অস্বস্তি থাকতে পারে।
  • বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া: কখনও কখনও বমি বমি ভাব বা খাদ্য ঊর্ধ্বমুখী হয়ে যেতে পারে।
  • শ্বাসপ্রশ্বাসে কষ্ট বা কাশি: কিছু মানুষের ক্ষেত্রে বুকজ্বলা শ্বাসকষ্ট সৃষ্টি করতে পারে, যা কাশি বা হাঁপানি সৃষ্টি করতে পারে।

প্রতিকার:

  1. খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন:
    • ভারী খাবার এড়িয়ে চলুন এবং কম পরিমাণে নিয়মিত খাবার খান।
    • মসলাযুক্ত, তিক্ত, চর্বিযুক্ত এবং ক্যাফেইন জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।
    • শোয়ার পর খাওয়ার পর কমপক্ষে ২-৩ ঘণ্টা অপেক্ষা করুন।
  2. অ্যান্টাসিড ওষুধ: বুকজ্বলা নিরাময়ের জন্য ওষুধ যেমন প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর (PPI) বা হিস্টামিন 2 ব্লকার (H2 blockers) ব্যবহার করা যেতে পারে।
  3. ধূমপান মদ্যপান পরিহার: এগুলো বুকজ্বলার উপসর্গ আরও বাড়াতে পারে, তাই এই অভ্যাসগুলো ত্যাগ করা উচিত।
  4. ওজন কমানো: অতিরিক্ত ওজন কমালে বুকজ্বলার উপসর্গ কমতে পারে।
  5. গর্ভাবস্থায় সাবধানতা: গর্ভবতী মহিলাদের জন্য বুকজ্বলা সাধারণত হরমোনাল কারণে হয়, তাই চিকিৎসকের পরামর্শে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করা উচিত।
  6. শরীরের অবস্থান পরিবর্তন: শোয়ার সময় মাথা কিছুটা উঁচু রাখুন। এর ফলে খাদ্যনালীতে অ্যাসিড ফিরে আসার প্রবণতা কমে যায়।
  7. বাড়তি পরিমাণ পানি পান: শরীরকে হাইড্রেটেড রাখলে অ্যাসিডকে শোষণ করতে সাহায্য হয়।

যদি বুকজ্বলা দীর্ঘস্থায়ী বা তীব্র হয়ে থাকে, তবে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, কারণ এটি গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ (GERD) বা অন্যান্য জটিল সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *