Best Homeo Doctor

বিসর্প কি,কারন,লক্ষন,প্রতিকার

বিসর্প (Biserp) বা বিষর্প সাধারণত এক ধরনের চর্মরোগ, যা চামড়ায় জ্বালাপোড়া, লালচে ফোস্কা বা ফুসকুড়ি, এবং ত্বকের প্রদাহ সৃষ্টি করে। এটি সাধারণত শ্বেতী বা দাদ (Ringworm) নামেও পরিচিত। এই রোগটি ছত্রাকজনিত সংক্রমণের কারণে হয়, যা সাধারণত ত্বকের বিভিন্ন অংশে সংক্রমণ সৃষ্টি করে।  

বিসর্পের কারণ:

  1. ছত্রাকের সংক্রমণ: এটি মূলত ফাঙ্গাল (ছত্রাক) সংক্রমণের কারণে ঘটে, বিশেষ করে Trichophyton বা Microsporum প্রজাতির ছত্রাকের মাধ্যমে। এই ছত্রাকগুলি ত্বকে ইনফেকশন সৃষ্টি করে।
  2. অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন: খোলামেলা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বা স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে বেশি সময় কাটালে ছত্রাক সংক্রমণের সম্ভাবনা বাড়ে। যেমন, গরম এবং আর্দ্র পরিবেশে এই ছত্রাক দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
  3. অপরিষ্কার ত্বক: শরীরের ত্বক পরিষ্কার না রাখলে বা অতিরিক্ত ঘাম হলে বিসর্পের সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
  4. ইনফেকশন থেকে ছড়ানো: একটি ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির মধ্যে এই রোগটি ছড়াতে পারে, বিশেষ করে যখন একটি আঘাত বা ক্ষত থাকে।
  5. দীর্ঘস্থায়ী অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার: কিছু ক্ষেত্রে দীর্ঘকাল ধরে অ্যান্টিবায়োটিক বা স্টেরয়েড ব্যবহারের কারণে ত্বকের সংক্রমণ হতে পারে।

বিসর্পের লক্ষণ:

  1. ফোস্কা বা ফুসকুড়ি: বিসর্পের প্রধান লক্ষণ হল ত্বকে গোলাকার, লালচে, ফুসকুড়ি বা ফোস্কা দেখা দেয়। ফোস্কা সাধারণত খোসা ছাড়ানোর মতো আকারে হতে পারে।
  2. চুলকানি বা জ্বালা: ত্বক জ্বালা বা চুলকানোর অনুভূতি সৃষ্টি হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে এটি খুবই কষ্টকর হতে পারে।
  3. খোসা পড়া: আক্রান্ত স্থানে ত্বক শুকিয়ে খোসা পড়তে পারে।
  4. বিস্তার লাভ করা: এটি আক্রান্ত স্থানে ছড়িয়ে যেতে পারে এবং সেখান থেকে অন্য স্থানে ছড়িয়ে যেতে পারে।

বিসর্পের প্রতিকার:

  1. ছত্রাকের জন্য অ্যান্টিফাঙ্গাল চিকিৎসা: বিসর্পের চিকিৎসা করার জন্য সাধারণত অ্যান্টিফাঙ্গাল (antifungal) ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করা হয়। কিছু পরিস্থিতিতে অ্যান্টিফাঙ্গাল ট্যাবলেটও প্রয়োজন হতে পারে।
  2. পানিতে ভিজিয়ে পরিষ্কার করা: আক্রান্ত স্থানে পরিষ্কার রাখতে হবে, তবে সাবান বা শ্যাম্পু ব্যবহার করে অতিরিক্ত ঘষা পরিহার করতে হবে।
  3. স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন: ত্বক ও শরীরের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে। শরীরে ঘাম জমে না যাওয়ার জন্য ত্বক শুকনো রাখতে হবে।
  4. আক্রান্ত অংশে হাত না দেওয়া: বিসর্প সংক্রমণ খুব দ্রুত ছড়াতে পারে, তাই আক্রান্ত অংশে হাত না দেওয়া উচিত এবং সম্ভব হলে তা ঢেকে রাখার চেষ্টা করতে হবে।
  5. শরীর শুকনো রাখা: বিসর্পের সংক্রমণ ছত্রাকের মাধ্যমে হয়ে থাকে, এবং ছত্রাক গরম এবং স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে দ্রুত বৃদ্ধি পায়। তাই আক্রান্ত অংশ শুকনো এবং পরিষ্কার রাখা উচিত।
  6. ডাক্তারের পরামর্শ: যদি বিসর্প বাড়তে থাকে বা প্রতিকার না হয়, তবে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। তাদের কাছে যথাযথ চিকিৎসা পাওয়া যাবে, যেমন টপিক্যাল অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ বা অন্য কোনো থেরাপি।

এছাড়া, কিছু গৃহস্থালির চিকিৎসাও করতে পারেন, যেমন কাঁচা হলুদ বা টক দইয়ের প্যাক ব্যবহার করা, তবে এটি চিকিৎসকের পরামর্শে করা উচিত।

সতর্কতা:

  • বিসর্পটি খুবই ছোঁয়াচে, তাই অন্যদের কাছে যাতে না ছড়ায় সে জন্য সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
  • আক্রান্ত স্থানে প্রচুর ঘষা বা চাপ না দেওয়া উচিত, এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সঠিকভাবে নিতে হবে।

 

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *