বিছানায় প্রসাব করা কি,কারন,লক্ষন,প্রতিকার

বিছানায় প্রসাব করা বা নৈপুণ্যগত পেশাব (Bedwetting), যা সাধারণত “ইনকন্টিনেন্স” (Incontinence) বা “এনুরেসিস” (Enuresis) নামেও পরিচিত, এটি এমন একটি সমস্যা যেখানে একটি শিশু বা প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ঘুমানোর সময় অজান্তে প্রসাব করে। এটি সাধারণত শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়, তবে কখনও কখনও এটি প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যেও হতে পারে।

কারণ:

বিছানায় প্রসাব করার বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে, যেমন:

1. শারীরিক সমস্যা:

   • মূত্রাশয়ের অতিরিক্ত পূর্ণতা বা দুর্বল পেশী।
   • মূত্রনালির কোনো শারীরিক সমস্যা বা সংক্রমণ।
   • হরমোনের অস্বাভাবিকতা, যেমন অ্যান্টিডাইুরেটিক হরমোন (ADH) এর অভাব।

2. মানসিক চাপ:

   • শিশুদের মাঝে মানসিক চাপ, উদ্বেগ বা আতঙ্কের কারণে এমন হতে পারে।
   • পরিবারিক পরিবর্তন, যেমন নতুন স্কুলে যাওয়া বা ছোট ভাই/বোনের জন্ম, প্রভাব ফেলতে পারে।

3. আনন্দদায়ক ঘুম:

   • গভীর ঘুমের ফলে মস্তিষ্ক মূত্রাশয়কে সতর্ক করতে পারে না।

4. জেনেটিক বা বংশগত কারণ:

   • কিছু ক্ষেত্রে বংশগত কারণে বিছানায় প্রসাবের সমস্যা দেখা দেয়। যদি পরিবারে কারো এ সমস্যা থাকে, তবে তার সন্তানদেরও এমন হতে পারে।

5. অতিরিক্ত তরল গ্রহণ:

   • রাতে বেশি পানি, চা, বা অন্যান্য তরল খাবার খাওয়ার কারণে মূত্রাশয়ের চাপ বাড়তে পারে।

লক্ষণ:

1. বিছানায় প্রসাব করা: ঘুমানোর সময় অজান্তে প্রসাব করা।
2. সার্বিক অস্বস্তি: শিশুরা এটি সাধারণত লজ্জা বা দুঃখের অনুভূতি অনুভব করতে পারে।
3. ঘুমের সমস্যা: গভীর ঘুমের কারণে কখনও কখনও তারা প্রসাব করার অনুভূতি বুঝতে পারে না।
4. পেট ব্যথা বা মূত্রাশয়ের সমস্যা: কিছু ক্ষেত্রে মূত্রাশয়ের সংক্রমণ বা অন্যান্য শারীরিক সমস্যা থাকতে পারে, যার ফলে প্রসাবের সমস্যা দেখা দেয়।

প্রতিকার:

1. সঠিক খাদ্যাভ্যাস:

   • রাতে খুব বেশি তরল গ্রহণ থেকে বিরত থাকা।
   • বিশেষ করে ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহল জাতীয় পানীয়গুলো এড়িয়ে চলা।

2. পেশী প্রশিক্ষণ:

   • মূত্রাশয়ের পেশী শক্তিশালী করার জন্য কিছু ব্যায়াম করা যেতে পারে, যেমন কেগেল এক্সারসাইজ।

3. মনোনীতি সহায়তা:

   • শিশুদের ক্ষেত্রে, অতিরিক্ত চাপ বা উদ্বেগ কমানোর জন্য তাদের মনস্তাত্ত্বিক সমর্থন দেওয়া যেতে পারে।

4. ঘুমের নিয়মিত অভ্যাস তৈরি:

   • শিশু বা প্রাপ্তবয়স্কদের ভালো ঘুমের অভ্যাস তৈরি করা, যেমন নির্দিষ্ট সময় তে ঘুমানো।

5. দ্বৈত চিকিৎসা:

   • কোনো শারীরিক সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা। কোনো সংক্রমণ বা শারীরিক অসুবিধা থাকলে সেগুলোর চিকিৎসা করা প্রয়োজন।

6. ষোল বা হরমোনাল চিকিৎসা:

   • কিছু ক্ষেত্রে, ডাক্তার হরমোনাল চিকিৎসার পরামর্শ দিতে পারেন যা মূত্রাশয়ের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

অতএব, যদি বিছানায় প্রসাব করার সমস্যা অব্যাহত থাকে, বিশেষ করে প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে, তাহলে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।