Best Homeo Doctor

বাধক বেদনা কি,কারন,লক্ষন প্রতিকার

বাধক বেদনা (Pelvic Pain) হল পেটের নিচের অংশ, যোনি, জরায়ু, ডিম্বাশয়, মূত্রথলি বা অন্যান্য পেলভিক অঙ্গের মধ্যে অনুভূত ব্যথা। এটি একটি সাধারণ সমস্যা যা মহিলাদের মধ্যে দেখা যায় এবং বিভিন্ন কারণে হতে পারে। কখনো এটি সাময়িক বা মৃদু হতে পারে, আবার কখনো এটি দীর্ঘস্থায়ী বা তীব্র হতে পারে।

বাধক বেদনার কারণ:

  1. মাসিক চক্রের কারণে:
    • মেনস্ট্রুয়াল পেইন (Dysmenorrhea): মাসিকের সময় হরমোনের কারণে পেটে বা পেলভিক এলাকায় ব্যথা হওয়া।
    • এন্ডোমেট্রিওসিস: জরায়ুর আবরণ (এন্ডোমেট্রিয়াম) শরীরের অন্যান্য জায়গায় বৃদ্ধি পেলে এতে ব্যথা হতে পারে।
  2. গর্ভাবস্থা:
    • গর্ভাবস্থায় গর্ভাশয় সম্প্রসারণের কারণে পেলভিক এলাকায় ব্যথা হতে পারে, বিশেষত প্রথম তিন মাসে।
    • গর্ভপাত: গর্ভপাতের কারণে তীব্র ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
  3. ওভারি (ডিম্বাশয়) সমস্যা:
    • ওভারি সিস্ট: ডিম্বাশয়ে ফোলাভাব হলে বা সিস্ট (সিস্টে পানি বা তরল জমে) হলে ব্যথা হতে পারে।
    • ওভারি টিউমার: কখনো কখনো ডিম্বাশয়ে টিউমারও ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে।
  4. ইনফেকশন:
    • পেলভিক ইনফ্ল্যামেটরি ডিজিজ (PID): এটি একটি জীবাণু সংক্রমণ যা যোনি, জরায়ু, ডিম্বাশয় ইত্যাদি পেলভিক অঙ্গকে আক্রান্ত করে।
    • ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (UTI): মূত্রথলিতে সংক্রমণ হলে পেলভিক এলাকায় ব্যথা হতে পারে।
  5. পেটের বা মাংসপেশির সমস্যা:
    • আইবিএস (Irritable Bowel Syndrome): পেটের সমস্যা যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস বা ডায়রিয়ার কারণে ব্যথা হতে পারে।
    • ফাইব্রোমায়ালজিয়া: শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে, এবং পেলভিক এলাকাও এতে আক্রান্ত হতে পারে।
  6. গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল (GI) সমস্যা:
    • পেটের রোগ বা সমস্যা যেমন আলসার, কোলাইটিস ইত্যাদি বাধক বেদনা সৃষ্টি করতে পারে।

লক্ষণ:

  1. পেটে বা পেলভিক এলাকায় তীব্র ব্যথা বা চাপ অনুভূতি।
  2. বাধক এলাকায় চাপ বা অস্বস্তি।
  3. মাসিক চক্রের সময় ব্যথা বৃদ্ধি পেতে পারে।
  4. মূত্রত্যাগ বা মলের মাধ্যমে ব্যথা অনুভূতি।
  5. গর্ভাবস্থায় অস্বস্তি বা ব্যথা।
  6. অনিয়মিত পিরিয়ড বা মাসিক ব্যথা।

প্রতিকার:

  1. চিকিৎসকের পরামর্শ:
    • দীর্ঘস্থায়ী বা তীব্র বাধক বেদনা হলে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। চিকিৎসক উপযুক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে সঠিক কারণ চিহ্নিত করবেন এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসা দেবেন।
  2. ব্যথানাশক ওষুধ:
    • এনএসএআইডি (NSAIDs) যেমন ইবুপ্রোফেন বা প্যারাসিটামল ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
  3. গরম পানির ব্যাগ ব্যবহার:
    • পেটে গরম পানির ব্যাগ রাখলে পেশি শিথিল হয়ে ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
  4. জীবনযাত্রায় পরিবর্তন:
    • সুষম খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত শরীরচর্চা এবং যথেষ্ট পানি পান করা বাধক বেদনা কমাতে সহায়ক হতে পারে।
  5. ইনফেকশন চিকিৎসা:
    • যদি ইনফেকশন (যেমন PID বা ইউটিআই) থাকে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিফাঙ্গাল চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।
  6. স্ট্রেস কমানো:
    • মানসিক চাপ কমানোর জন্য মেডিটেশন বা অন্যান্য শিথিলতা পদ্ধতি ব্যবহার করা উপকারী হতে পারে।

যদি আপনার বাধক বেদনা দীর্ঘস্থায়ী বা তীব্র হয়ে থাকে, তবে এটি কোনো গুরুতর সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে, তাই চিকিৎসকের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করা উচিত।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *