Best Homeo Doctor

ফুসফুস ধমনীর সংকোচন কি,কারন,লক্ষন,প্রতিকার

ফুসফুস ধমনীর সংকোচন (Pulmonary Artery Constriction) বা ফুসফুসের ধমনীর সংকোচন একটি শারীরিক অবস্থা যেখানে ফুসফুসের ধমনীর মধ্যে সংকোচন বা সংকীর্ণতা সৃষ্টি হয়। ফুসফুসের ধমনী হলো সেই রক্তবাহী নালী যা হৃদয় থেকে অক্সিজেনহীন রক্তকে ফুসফুসে পাম্প করে অক্সিজেনের জন্য। যখন এই ধমনীর মধ্যে সংকোচন বা সংকীর্ণতা হয়, তখন ফুসফুসের রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হয়, যার ফলে শ্বাসকষ্ট এবং অন্যান্য গুরুতর সমস্যা দেখা দেয়।

ফুসফুস ধমনীর সংকোচনের কারণ:

ফুসফুসের ধমনীর সংকোচন বা রক্তনালীর সংকীর্ণতার কারণ হতে পারে:

  1. পালমোনারি হাইপারটেনশন (Pulmonary Hypertension): ফুসফুসের ধমনীর মধ্যে রক্তচাপ বৃদ্ধি হলে এটি ধমনীর সংকোচন সৃষ্টি করতে পারে। পালমোনারি হাইপারটেনশনের কারণে ফুসফুসে রক্ত প্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং হার্টের ডান পাশের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে।
  2. হার্টের রোগ: কিছু হার্টের সমস্যা যেমন বাল্ব সমস্যা, কনজেনিটাল হার্ট ডিজিজ বা অন্যান্য হৃদরোগ ফুসফুসের ধমনীর সংকোচন ঘটাতে পারে।
  3. ফুসফুসের প্রদাহ: ফুসফুসে যেকোনো প্রদাহ (যেমন পলমোনিয়া বা যক্ষ্মা) রক্ত প্রবাহের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
  4. তামাক সেবন: দীর্ঘকাল ধরে তামাক সেবন বা ধূমপান ফুসফুসের ধমনীর সংকোচন ঘটাতে পারে।
  5. অন্যান্য রোগ: কিছু রোগ যেমন সিস্টেমিক স্ক্লেরোসিস বা লুপাস ফুসফুসের ধমনীর সংকোচন সৃষ্টি করতে পারে।
  6. অপর্যাপ্ত অক্সিজেন: দীর্ঘ সময়ের জন্য কম অক্সিজেনের প্রাপ্যতা (যেমন উচ্চ altitudes বা শ্বাসনালী সমস্যা) ফুসফুসের ধমনীর সংকোচনের কারণ হতে পারে।

ফুসফুস ধমনীর সংকোচনের লক্ষণ:

ফুসফুস ধমনীর সংকোচনের লক্ষণ সাধারণত ধীরে ধীরে প্রকাশ পায় এবং পরিস্থিতি গুরুতর হলে তা তীব্র হতে পারে। এর কিছু সাধারণ লক্ষণ হলো:

  1. শ্বাসকষ্ট (Dyspnea): হাঁটাহাঁটি বা শারীরিক কাজ করার সময় শ্বাসকষ্ট অনুভূতি হতে পারে।
  2. বুকে ব্যথা: বুকের মধ্যে চাপ অনুভূতি বা ব্যথা হতে পারে।
  3. এডিমা (Edema): পায়ের অথবা পায়ে ফোলাভাব দেখা দিতে পারে, কারণ রক্ত সঞ্চালন সমস্যার কারণে শরীরে তরল জমে যায়।
  4. শারীরিক ক্লান্তি: সাধারণভাবে ক্লান্তি বা শক্তির অভাব অনুভূত হতে পারে।
  5. বাঁকা শ্বাস: শ্বাস গ্রহণ বা বাতাস বের করার সময় অসমান বা বাঁকা শ্বাস হতে পারে।
  6. চোখে গোলক পাকানো: ফুসফুসের রক্তচাপের কারণে চোখে চুলকানি বা অবাস্তব দৃষ্টিকোণ দেখা যেতে পারে।

ফুসফুস ধমনীর সংকোচনের প্রতিকার:

ফুসফুস ধমনীর সংকোচনের চিকিৎসা ও প্রতিকার নির্ভর করে এর কারণ এবং অবস্থার উপর। কিছু সাধারণ প্রতিকার বা চিকিৎসা পদ্ধতি হলো:

  1. ওষুধ:
    • ওষুধের মাধ্যমে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: পালমোনারি হাইপারটেনশনের জন্য চিকিৎসকরা কিছু বিশেষ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণকারী ওষুধ (যেমন ভাসোডিলেটর, প্রস্টাসাইক্লিন) prescribe করতে পারেন।
    • ডায়ুরেটিকস: অতিরিক্ত তরল শরীর থেকে বের করার জন্য ডায়ুরেটিকস ব্যবহার করা যেতে পারে যাতে এডিমা বা ফোলাভাব কমে।
  2. অক্সিজেন থেরাপি: যদি রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কম থাকে, তাহলে অক্সিজেন থেরাপি (অক্সিজেন সিলিন্ডার) ব্যবহার করা হতে পারে।
  3. ধূমপান বন্ধ করা: যদি তামাক সেবন (ধূমপান) ফুসফুসের ধমনীর সংকোচন সৃষ্টি করে থাকে, তবে এটি দ্রুত বন্ধ করা জরুরি।
  4. জীবনযাত্রার পরিবর্তন: নিয়মিত ব্যায়াম, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম গ্রহণে রক্ত সঞ্চালন ভাল রাখা সম্ভব।
  5. অ্যাঙ্কোথ্রোম্বোলিক থেরাপি (Antithrombotic Therapy): যদি ফুসফুসের ধমনীতে রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা হয়, তাহলে কিছু নির্দিষ্ট ধরনের থেরাপি প্রয়োগ করা হতে পারে।
  6. লক্ষণ অনুযায়ী শল্যচিকিৎসা: যদি ঔষধ বা থেরাপি কার্যকর না হয় এবং সমস্যা গুরুতর হয়ে থাকে, তবে কিছু ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার বা লাং ট্রান্সপ্ল্যান্ট প্রয়োজন হতে পারে।

ফুসফুস ধমনীর সংকোচন বা পালমোনারি হাইপারটেনশন একটি গুরুতর অবস্থা হতে পারে, তাই যদি এই ধরনের লক্ষণ অনুভূত হয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উচিত।

Top of Form

 

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *