ফুসফুসে ক্যান্সার হলো ফুসফুসের কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিভাজন, যা ক্যান্সারের সৃষ্টি করে। এটি এক ধরনের মারাত্মক অসুখ এবং সাধারণত ধূমপান বা দূষণের কারণে হয়।
ফুসফুসে ক্যান্সারের কারণ:
- ধূমপান: ধূমপান ফুসফুসের ক্যান্সারের প্রধান কারণ। অধিকাংশ ক্যান্সার ধূমপানকারীদের মধ্যে ঘটে থাকে।
- বায়ু দূষণ: দূষিত বায়ু যেমন, শিল্প কারখানার ধোঁয়া, যানবাহনের নিঃসরণ ইত্যাদি ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
- আসবেস্টস: বিভিন্ন ধরনের শিল্পে কাজ করার সময় আসবেস্টসের সংস্পর্শে আসলে ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে।
- জেনেটিক বা বংশগত: পরিবারে যদি কেউ ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকেন, তবে এটি বংশগত হতে পারে।
- অতিরিক্ত শরণাঙ্গী এবং রেডিয়েশন: অতিরিক্ত এক্সরে বা রেডিয়েশন চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়, যা ফুসফুসে ক্যান্সারের ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।
লক্ষণ:
ফুসফুসে ক্যান্সারের লক্ষণ শুরুতে খুব স্পষ্ট নাও হতে পারে, তবে কিছু সাধারণ লক্ষণ হল:
- স্থায়ী কাশি: দীর্ঘকাল ধরে কাশি থাকলে এটি ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে।
- শ্বাসকষ্ট: শ্বাস নিতে সমস্যা বা অস্বাভাবিক শ্বাসকষ্ট।
- রক্তের সঙ্গী কাশি: কাশির সঙ্গে রক্ত আসা।
- বুকে ব্যথা: বিশেষ করে শ্বাস নেওয়ার সময় বুকে তীব্র ব্যথা অনুভূতি।
- শরীরের ওজন হ্রাস: অকারণে ওজন কমে যাওয়া।
- অস্বাভাবিক ক্লান্তি: খুব দ্রুত ক্লান্ত হয়ে যাওয়া।
- হাঁপানি: হাঁপানি বা শ্বাসনালীতে বাঁধা অনুভূতি।
প্রতিকার:
ফুসফুসে ক্যান্সারের চিকিৎসা নির্ভর করে ক্যান্সারের স্তর, অবস্থান এবং অন্যান্য বিভিন্ন উপাদানের ওপর। কিছু সাধারণ প্রতিকার অন্তর্ভুক্ত:
- সার্জারি (অস্ত্রোপচার): ক্যান্সারটি যদি প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে, তবে সার্জারি মাধ্যমে আক্রান্ত অংশ অপসারণ করা হতে পারে।
- কেমোথেরাপি: ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করতে শক্তিশালী ঔষধ প্রয়োগ করা হয়।
- রেডিয়েশন থেরাপি: ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করার জন্য রেডিয়েশন ব্যবহার করা হয়।
- টার্গেট থেরাপি: বিশেষ ধরনের চিকিৎসা যা ক্যান্সারের কোষকে লক্ষ্য করে কাজ করে।
- হলিস্টিক চিকিৎসা: যেমন ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট, এক্সারসাইজ, এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ক্যান্সারের চিকিৎসা পরবর্তী সহায়ক হতে পারে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, সময়মত চিকিৎসা নেয়া এবং আগেভাগে রোগ চিহ্নিত করা। তবে, সবচেয়ে ভালো উপায় হল ক্যান্সার প্রতিরোধ করা, যেমন ধূমপান থেকে বিরত থাকা, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং দূষণ থেকে দূরে থাকা।