ফিস্টুলা (Fistula) হল একটি অস্বাভাবিক সুরঙ্গ বা পথ যা সাধারণত দুটি অভ্যন্তরীণ অঙ্গ বা একটি অভ্যন্তরীণ অঙ্গ এবং ত্বকের মধ্যে তৈরি হয়। এটি সাধারণত পুঁজ বা রক্ত প্রবাহিত হতে পারে। মলদ্বার ফিস্টুলা বা অ্যানাল ফিস্টুলা সবচেয়ে সাধারণ, যেখানে মলদ্বারের ভিতরের অংশ এবং ত্বকের মধ্যে একটি অস্বাভাবিক পথ তৈরি হয়।
ফিস্টুলার কারণ:
১. এনাল অ্যাবসেস: মলদ্বারের পকেটে প্রদাহ (অ্যাবসেস) তৈরি হলে তা ফিস্টুলায় রূপ নিতে পারে। ২. সংক্রমণ বা ব্যাকটেরিয়া: ইনফেকশন বা ব্যাকটেরিয়া মলদ্বারে বা অন্যান্য অঙ্গের মধ্যে ফিস্টুলা সৃষ্টি করতে পারে। ৩. আঘাত বা শল্যচিকিৎসা: মলদ্বার বা অন্যান্য অঙ্গের আঘাত বা অস্ত্রোপচারের কারণে ফিস্টুলা তৈরি হতে পারে। ৪. ক্রনিক প্রদাহজনিত রোগ: যেমন ক্রনিক ইন্টারস্টাইনাল ডিজিজ (CROHN’S DISEASE) বা সাংগঠনিক প্রদাহ (inflammatory bowel disease) ফিস্টুলার সৃষ্টি করতে পারে। ৫. রেডিওথেরাপি বা কেমোথেরাপি: মলদ্বারের কাছাকাছি রেডিওথেরাপি বা কেমোথেরাপির ফলে ফিস্টুলা হতে পারে।
ফিস্টুলার লক্ষণ:
১. মলদ্বারে বা অন্যান্য অঙ্গের চারপাশে ব্যথা বা অস্বস্তি। ২. পুঁজ বা রক্তপাত: ফিস্টুলার কারণে মলদ্বারে বা ত্বকে পুঁজ বা রক্ত বের হতে পারে। ৩. বাতাস বা গন্ধ বের হওয়া: ফিস্টুলার কারণে সাধারণত অবাঞ্ছিত গন্ধ বা বাতাস বের হতে পারে। ৪. এনাল ফিস্টুলায় চুলকানি বা জ্বালাপোড়া। ৫. মলত্যাগে সমস্যা: মলদ্বারের ক্ষত বা সংক্রমণ ফিস্টুলা সৃষ্টি করলে মলত্যাগে ব্যথা হতে পারে।
ফিস্টুলার প্রতিকার:
১. দৈহিক পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা: ফিস্টুলা আক্রান্ত এলাকাটি পরিষ্কার ও শুকনো রাখা। ২. অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ: ইনফেকশন কমানোর জন্য ডাক্তার দ্বারা পরামর্শ দেওয়া অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা। ৩. অপারেশন বা সার্জারি: গুরুতর ফিস্টুলা ক্ষেত্রগুলির জন্য সার্জারি প্রয়োজন হতে পারে, যেখানে আক্রান্ত অংশটি অপসারণ বা সেলাই করে সঠিকভাবে মেরামত করা হয়। 4. ফাইবার সমৃদ্ধ ডায়েট: কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া। ৫. পেনিসিলিন বা স্থানীয় চিকিৎসা: কিছু ক্ষেত্রে স্থানীয় চিকিৎসা বা ক্রিমের মাধ্যমে ফিস্টুলার প্রাথমিক লক্ষণগুলো উপশম করা যায়।
ফিস্টুলার ক্ষেত্রে যদি কোন গুরুতর লক্ষণ যেমন পুঁজ বা রক্তপাত দেখা দেয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।