Best Homeo Doctor

প্রচন্ড জ্বর কি,কারন,লক্ষন,প্রতিকার

প্রচন্ড জ্বর বা উচ্চ তাপমাত্রা (High Fever) এমন একটি অবস্থা যেখানে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক সীমার (৩৭.৫ – ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) থেকে অনেক বেশি বেড়ে যায়, সাধারণত ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তারও বেশি। এটি শরীরের কোনো ধরনের সংক্রমণ বা রোগের কারণে হতে পারে, যখন শরীর ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা সক্রিয় করে।

প্রচন্ড জ্বরের কারণ:

প্রচন্ড জ্বরের বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

  1. ভাইরাল সংক্রমণ: যেমন ফ্লু, ডেঙ্গু, চিকুন গুনিয়া, হেপাটাইটিস, জাপানী এনসেফালাইটিস ইত্যাদি।
  2. ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ: যেমন টাইফয়েড, শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ, কিডনি ইনফেকশন, মেনিনজাইটিস ইত্যাদি।
  3. টক্সিক রিঅ্যাকশন: কিছু শক্তিশালী ওষুধ বা ভ্যাকসিনের পরেও জ্বর হতে পারে।
  4. অটোইমিউন রোগ: যেমন লুপাস বা রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস, যেখানে শরীর নিজেই শরীরের কোষের বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করে।
  5. গরমের স্ট্রোক: গরমের কারণে শরীরের তাপমাত্রা বিপদজনকভাবে বেড়ে যেতে পারে, বিশেষ করে গরম আবহাওয়ায়।
  6. ক্যান্সার বা টিউমার: কিছু বিশেষ ধরনের ক্যান্সারও প্রচন্ড জ্বরের কারণ হতে পারে।

প্রচন্ড জ্বরের লক্ষণ:

  1. তাপমাত্রা বৃদ্ধি: সাধারণত তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তারও বেশি হতে পারে।
  2. কম্পন বা শীতল অনুভূতি: জ্বরের সময় শরীরের মধ্যে শীতল অনুভূতি বা কাঁপুনি অনুভূত হতে পারে।
  3. মাথাব্যথা: প্রচন্ড মাথাব্যথা হতে পারে, বিশেষত উচ্চ তাপমাত্রার জন্য।
  4. পেশী বা শরীরের ব্যথা: শরীরে ক্লান্তি বা পেশী ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
  5. শরীরের অসুস্থতা বা অস্থিরতা: ক্লান্তি, দুর্বলতা বা শরীরের মধ্যে অস্বস্তি অনুভূত হতে পারে।
  6. চেহারায় লালচে ভাব বা ঘাম হওয়া: তাপমাত্রা বাড়লে শরীর ঘামাতে পারে বা লালচে হয়ে যেতে পারে।
  7. শ্বাসকষ্ট বা দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস: কিছু ক্ষেত্রে, প্রচন্ড জ্বর শ্বাস-প্রশ্বাসে পরিবর্তন আনতে পারে।
  8. বমি বা বমি ভাব: জ্বরের সাথে বমি, মাথাব্যথা বা গা ঘোরানো অনুভূতি থাকতে পারে।

প্রচন্ড জ্বরের প্রতিকার:

  1. পানির পরিমাণ বাড়ানো: জ্বরের সময় শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বেরিয়ে যেতে পারে, তাই প্রচুর পানি, ডাবের পানি, স্যালাইন পান করুন যাতে ডিহাইড্রেশন এড়ানো যায়।
  2. প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন: জ্বর কমাতে প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী।
  3. শরীর ঠান্ডা রাখুন: ঠাণ্ডা পানি দিয়ে শরীর আলতো করে মুছুন বা ঠান্ডা সেঁক (cold compress) ব্যবহার করতে পারেন।
  4. বিশ্রাম: শরীরকে সম্পূর্ণ বিশ্রাম দিন, কারণ শারীরিক শক্তি সঞ্চয় করতে হবে।
  5. গরম কাপড় পরিধান না করা: গরম কাপড় পরিধান করলে তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে, তাই হালকা পোশাক পরুন।
  6. প্রয়োজনীয় পুষ্টি: পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন, তবে যদি খাদ্য গ্রহণে সমস্যা হয়, তাহলে তরল খাবার যেমন স্যুপ বা তরল ফলের রস পান করুন।

কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে:

যদি জ্বর দীর্ঘস্থায়ী হয় (৩ দিনের বেশি), খুব উচ্চ (৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি) হয়, বা জ্বরের সাথে অন্যান্য গুরুতর লক্ষণ যেমন শ্বাসকষ্ট, সৌন্দর্য পরিবর্তন, অতিমাত্রায় ক্লান্তি, কাঁপুনি বা গা ঘোরানো দেখা দেয়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

প্রচন্ড জ্বর সাধারণত শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা সক্রিয় হওয়ার কারণে হতে পারে, তবে এটি যদি দীর্ঘস্থায়ী হয় বা গুরুতর লক্ষণ দেখা দেয়, তা হলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *