পোড়া ঘা (Burn wound) হলো ত্বকের এক ধরনের ক্ষতি যা তাপ, রসায়ন, বৈদ্যুতিক শক, কিংবা অতিবেগুনী রশ্মির কারণে হয়। এটি ত্বকের উপরের স্তরের ক্ষত সৃষ্টি করে এবং ক্ষতির তীব্রতা বিভিন্ন রকম হতে পারে।
কারণ:
পোড়া ঘা সাধারণত চারটি কারণে হতে পারে:
- তাপ: গরম পানি, আগুন বা গরম যন্ত্রপাতির সংস্পর্শে আসলে।
- রসায়ন: রাসায়নিক দ্রব্য, যেমন অ্যাসিড বা ক্ষার থেকে।
- বৈদ্যুতিক শক: বিদ্যুৎ বা বৈদ্যুতিক তারের সাথে সরাসরি সংস্পর্শ।
- আলট্রাভায়োলেট রশ্মি (UV): সূর্যের অতিরিক্ত রশ্মির কারণে (যেমন সানবার্ন)।
লক্ষণ:
পোড়া ঘার লক্ষণগুলি ক্ষতির তীব্রতার উপর নির্ভর করে:
- প্রথম ধাপ (First-degree burn):
- ত্বক লাল হয়ে যায়।
- ত্বক শুষ্ক ও ব্যথাযুক্ত হয়।
- সাধারণত ত্বকের উপরের স্তর ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এবং এটি দ্রুত সেরে ওঠে।
- দ্বিতীয় ধাপ (Second-degree burn):
- ত্বকে ফুসকুড়ি দেখা দেয়।
- ব্যথা থাকে এবং ত্বক আর্দ্র হতে পারে।
- ত্বক কিছুটা পুড়ে এবং ফোলাভাব দেখা দেয়।
- তৃতীয় ধাপ (Third-degree burn):
- ত্বক সম্পূর্ণ পুড়ে যায় এবং ত্বকের গভীর স্তর ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
- ত্বক সাদা বা কালো হয়ে যেতে পারে।
- এখানে তীব্র ব্যথা কম থাকে কারণ নার্ভ শেষ হয়ে যেতে পারে।
প্রতিকার:
- প্রথম ধাপের পোড়া:
- ঠাণ্ডা পানি দিয়ে পোড়া স্থানটি ধুয়ে ফেলুন (অন্য কিছু ব্যবহার না করে, শুধু পানি ব্যবহার করবেন)।
- অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম বা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন।
- ব্যথা কমাতে প্যারাসিটামল বা অন্য কোনো ব্যথানাশক নিতে পারেন।
- দ্বিতীয় ধাপের পোড়া:
- পোড়া স্থান পরিষ্কার রেখে আচ্ছাদন করুন (স্টেরাইল গজ ব্যান্ডেজ ব্যবহার করা ভালো)।
- ফুসকুড়ি ফাটাতে পারবেন না।
- প্রফেশনাল চিকিৎসকের সাহায্য নিন।
- তৃতীয় ধাপের পোড়া:
- দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে।
- চিকিত্সক দেহে পানির ভারসাম্য রক্ষা করতে এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে সহায়তা করবেন।
- এমন পোড়া ঘাতে কখনোই বাড়িতে চিকিৎসা করবেন না, দ্রুত চিকিৎসকের সহায়তা নিন।
বিশেষ সতর্কতা:
- পোড়া ঘা গুরুতর হলে, দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে। গভীর পোড়া ঘা ছাড়া কোনো ধরনের চিকিৎসা বাড়িতে করা উচিত নয়।
- পোড়া এলাকায় কোন প্রকার ময়েশ্চারাইজার বা মাখন ব্যবহার করা উচিত নয়, কারণ এটি ক্ষতিতে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
সতর্ক থাকুন এবং পোড়া ঘা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।