পুরাতন জ্বর বা ক্রনিক জ্বর একটি দীর্ঘস্থায়ী শারীরিক অবস্থা, যেখানে জ্বরের উপসর্গ কয়েক সপ্তাহ বা মাস ধরে স্থায়ী থাকে। এটি সাধারণত কোনো প্রাথমিক রোগের পরিপ্রেক্ষিতে অথবা শরীরের কোনো দীর্ঘমেয়াদী সমস্যার কারণে হতে পারে।
পুরাতন জ্বরের কারণ:
১. ইনফেকশন: কিছু ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা ফাঙ্গাস দীর্ঘস্থায়ীভাবে শরীরে সংক্রমণ ঘটাতে পারে, যেমন:
- টিউবারকুলোসিস (TB)
- হেপাটাইটিস B এবং C
- ম্যালেরিয়া
- এনাটমিক ইনফেকশন (যেমন, ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন বা পেটের ইনফেকশন)
২. অটোইমিউন ডিসঅর্ডার: যেখানে শরীরের প্রতিরোধক ব্যবস্থা নিজের কোষকে আক্রমণ করে, যেমন:
- লুপাস
- রিউমেটয়েড আর্থ্রাইটিস
- গাউট
- ক্যান্সার: কিছু ধরনের ক্যান্সার যেমন লিম্ফোমা বা লিউকেমিয়া দীর্ঘমেয়াদী জ্বর সৃষ্টি করতে পারে।
- হরমোনাল ইমব্যালান্স: থাইরয়েডের সমস্যা বা অ্যাডিনাল গ্ল্যান্ডের অসুখেও জ্বর হতে পারে।
- যান্ত্রিক বা পরিবেশগত কারণে: যেমন অতিরিক্ত গরমে বা শীতের কারণে শরীরে অস্বস্তি তৈরি হয়ে জ্বর উঠতে পারে।
লক্ষণ:
পুরাতন জ্বরের সাধারণ লক্ষণ গুলি হতে পারে:
- শরীরে ঠান্ডা ও গরম অনুভব
- মাথা ব্যথা
- ক্লান্তি বা দুর্বলতা
- ঘাম বা রাতে ঘামানো
- শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা
- কখনও কখনও ওজন কমে যাওয়া বা ক্ষুধামন্দা
- কখনো কখনো, প্রাথমিক রোগের লক্ষণও দেখা দিতে পারে, যেমন হাঁপানি, কাশির প্রবণতা, কিংবা পেটের সমস্যা।
প্রতিকার:
পুরাতন জ্বরের প্রতিকার নির্ভর করে মূল কারণের উপর:
- চিকিৎসা গ্রহণ: উপযুক্ত রোগ শনাক্ত করে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসরণ করা উচিত।
- যদি ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন থাকে, তবে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন।
- ভাইরাল ইনফেকশন হলে সাপোর্টিভ কেয়ার (যেমন বিশ্রাম, পর্যাপ্ত পানি, ওষুধ) প্রয়োজন।
- ডায়েট: পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, পর্যাপ্ত পানি পান করা এবং বিশ্রাম নেওয়া জরুরি।
- পদক্ষেপ গ্রহণ: যদি অটোইমিউন বা অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা থাকে, তবে বিশেষ চিকিৎসা, যেমন স্টেরয়েডস বা ইমিউনোথেরাপি প্রযোজ্য হতে পারে।
- ফিজিক্যাল থেরাপি: মাংশপেশী দুর্বল হয়ে গেলে ফিজিক্যাল থেরাপি প্রয়োজন হতে পারে।
যেহেতু পুরাতন জ্বরের পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে, তাই সঠিক কারণ নির্ণয় এবং চিকিৎসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতেই হবে।