নাসিকা অর্বুদ (নাসাল ক্যান্সার) হচ্ছে নাক বা নাসিকার মধ্যে ক্যান্সারের উপস্থিতি, যা নাসিকার ভিতরে বা আশেপাশে অস্বাভাবিক কোষের বৃদ্ধি ঘটায়। এটি একটি বিরল ধরনের ক্যান্সার, তবে যদি নির্ধারণ এবং চিকিৎসা করা না হয়, তাহলে এটি গুরুতর হতে পারে।
নাসিকা অর্বুদ (নাসাল ক্যান্সার) এর কারণ:
নাসিকা অর্বুদ হওয়ার নির্দিষ্ট কারণ জানা না গেলেও কিছু কারণের কারণে এটি হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে:
- ধূমপান: ধূমপান নাসিকার ক্যান্সারের প্রধান কারণ হতে পারে, বিশেষত তামাকের ধোঁয়া বা অন্যান্য ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ।
- অ্যালকোহল সেবন: অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন নাসিকা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
- বিশেষ ধরনের রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শ: দীর্ঘসময় ধরে কিছু রাসায়নিক পদার্থের (যেমন, কাঠের ধূলা, আর্সেনিক, ফর্মালডিহাইড) সংস্পর্শে থাকা নাসিকা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
- অসংলগ্ন খাদ্যাভ্যাস: বেশি ফ্যাটি বা প্রসেসড খাদ্য খাওয়ার ফলে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে, যা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
- ভাইরাস সংক্রমণ: হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস (HPV) বা অন্যান্য ভাইরাস সংক্রমণ নাসিকার ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে।
নাসিকা অর্বুদ (নাসাল ক্যান্সার) এর লক্ষণ:
নাসিকা অর্বুদ (নাসাল ক্যান্সার) এর লক্ষণ অনেক সময় অন্য সাধারণ নাসিকার সমস্যা যেমন সর্দি, অ্যালার্জি বা ফ্লু থেকে আলাদা করা কঠিন হতে পারে। তবে কিছু সাধারণ লক্ষণ হলো:
- নাসিকা বা মুখের ভিতরে গাঁট বা টিউমার: নাসিকার ভিতরে বা বাইরে কোন অস্বাভাবিক গাঁট বা টিউমার দেখা দিতে পারে।
- রক্তপাত: নাসিকা বা গলার মধ্যে থেকে রক্তপাত বা রক্তাক্ত সর্দি আসা।
- নাকের ব্লক হওয়া: একপাশে নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ার অনুভূতি এবং দীর্ঘকাল ধরে নাক বন্ধ থাকা।
- মুখে ব্যথা বা গলার ব্যথা: নাসিকার কাছাকাছি ব্যথা বা অসুবিধা।
- শ্বাসকষ্ট বা গলার সংকোচন: শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া বা গলার ভেতর অবসন্নতা অনুভূতি।
- স্বাদের পরিবর্তন: খাবারের স্বাদ নষ্ট হয়ে যাওয়া।
- অস্বাভাবিক মুখের স্ফীতি বা গালে ব্যথা: মুখের একটি অংশে স্ফীতি বা অসম্ভাবী ফুলে যাওয়া।
নাসিকা অর্বুদ (নাসাল ক্যান্সার) এর প্রতিকার:
নাসিকা অর্বুদ বা ক্যান্সারের চিকিৎসা সাধারণত রোগের ধরণ, অবস্থান এবং স্টেজ অনুসারে নির্ধারিত হয়। প্রতিকার বা চিকিৎসা পদ্ধতিগুলি অন্তর্ভুক্ত করতে পারে:
- সার্জারি (অপারেশন): ক্যান্সার আক্রান্ত অংশ অপসারণ করার জন্য সার্জারি করা হতে পারে।
- কেমোথেরাপি: কেমোথেরাপি বা রাসায়নিক চিকিৎসা সেল ধ্বংস করতে এবং ক্যান্সারের বৃদ্ধির গতি কমাতে ব্যবহৃত হতে পারে।
- রেডিওথেরাপি: রেডিওথেরাপি ক্যান্সার কোষগুলিকে ধ্বংস করতে সহায়ক হতে পারে এবং সার্জারি সহ অন্যান্য চিকিৎসার পরে ব্যবহৃত হতে পারে।
- ইমিউনোথেরাপি: শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এবং ক্যান্সারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য ইমিউনোথেরাপি ব্যবহার করা যেতে পারে।
- প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা: ধূমপান এবং অ্যালকোহল সেবন পরিহার করা, পরিবেশগত বিষাক্ত পদার্থ থেকে দূরে থাকা, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক হতে পারে।
যেহেতু নাসিকা অর্বুদ (নাসাল ক্যান্সার) একটি বিরল রোগ, তাই এটি সঠিক সময়ে শনাক্ত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোগের শুরুর দিকে চিকিৎসা গ্রহণ করলে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।