জ্বরঠুটো (Relapsing Fever) হল এমন একটি ধরনের জ্বর যা নির্দিষ্ট সময়ের পর পর ফের ফিরে আসে, এবং প্রতিবারের জ্বরের তীব্রতা ও সময়কাল আলাদা হতে পারে। এটি সাধারণত ম্যালেরিয়া, লেম্ব্রোজ (Louse-borne fever), বা অন্যান্য কিছু সংক্রমণজনিত রোগের কারণে হতে পারে।
কারণ:
জ্বরঠুটোর সাধারণ কারণ হলো:
- বোরেলিয়া (Borrelia) সংক্রমণ – এটি একটি ব্যাকটেরিয়া যা জীবাণুর মাধ্যমে ছড়ায়, যেমন লাইকান (Louse-borne), টিক–বোর্ন (Tick-borne) বা মাউস–অংশীদার (Mouse-borne) সংক্রমণ।
- লাইম রোগ (Lyme Disease) – এটি টিকের মাধ্যমে ছড়াতে পারে এবং জ্বরঠুটোর কারণ হতে পারে।
- বিভিন্ন ভাইরাল ইনফেকশন – কিছু ভাইরাস যেমন হেইমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা বা অন্যান্য ভাইরাস ইনফেকশনও এর কারণ হতে পারে।
- অটোইমিউন রোগ – কিছু অটোইমিউন রোগ যেমন সিস্টেমিক লুপাস এরিথেমাটোসাস বা রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসও কখনো কখনো জ্বরঠুটোর মতো লক্ষণ সৃষ্টি করতে পারে।
লক্ষণ:
জ্বরঠুটোর লক্ষণ সাধারণত এর তীব্রতা ও সময়কাল অনুসারে পরিবর্তিত হতে পারে। কিছু সাধারণ লক্ষণ:
- জ্বরের ওঠানামা: জ্বর কখনো বাড়ে, কখনো কমে, এবং কিছু দিন পর ফের ফিরে আসে।
- সিরোসিস বা পেশির ব্যথা: শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভূত হতে পারে।
- কাঁপুনি বা ঠাণ্ডা লাগা: জ্বর ওঠার সময় কাঁপুনি বা ঠাণ্ডা অনুভূতি হতে পারে।
- শরীরের তাপমাত্রার বৃদ্ধি: প্রায়ই জ্বর ১০০-১০৫ ফারেনহাইট পর্যন্ত উঠতে পারে।
- অবসন্নতা বা ক্লান্তি: ক্লান্তি অনুভূতি বা বিশ্রাম না পাওয়া।
- মাথাব্যথা এবং বমি: কিছু ক্ষেত্রে মাথাব্যথা এবং বমি হতে পারে।
প্রতিকার:
জ্বরঠুটোর চিকিৎসা মূলত তার কারণ অনুযায়ী নির্ভর করে। তবে কিছু সাধারণ প্রতিকার:
- অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিভাইরাল চিকিৎসা: যদি ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে হয়, তবে চিকিৎসক নির্দিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিভাইরাল ঔষধ নির্ধারণ করবেন।
- পানি এবং তরল গ্রহণ: শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে প্রচুর পানি এবং তরল পান করা জরুরি।
- বিশ্রাম: শরীরের শক্তি পুনরুদ্ধারের জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া উচিত।
- জ্বর কমানোর ঔষধ: প্যারাসিটামল বা অন্য কোনো জ্বর কমানোর ঔষধ নিতে পারেন, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।
- সুষম খাদ্য গ্রহণ: সুষম ও পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়া শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে।
জ্বরঠুটো এমন একটি অবস্থা যা সাধারণত চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা করা উচিত, কারণ এর কারণ বুঝে চিকিৎসা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।