Best Homeo Doctor

ছুলি কি,কারন,লক্ষন,প্রতিকার

ছুলি (Scabies) একটি ত্বক সংক্রমণ যা সারকপটেস স্কাবেই (Sarcoptes scabiei) নামক পরজীবী খোঁচা বা মাইটের কারণে হয়। এই পরজীবী ত্বকের উপর চলে এবং চুলকানি এবং অন্যান্য ত্বক সমস্যা সৃষ্টি করে।

ছুলির কারণ:

ছুলি ঘটে যখন সারকপটেস স্কাবেই (Sarcoptes scabiei) নামক মাইট ত্বকে আক্রমণ করে। এই মাইট ত্বকের মধ্যে ছোট ছোট গর্ত করে বাসা বাঁধে, এবং তাদের বাচ্চা দানাতে ত্বক চুলকানো এবং প্রদাহ সৃষ্টি করে। এই মাইট সাধারণত সরাসরি ত্বক থেকে ত্বকে সংক্রমিত হয়, যেমন:

  1. নির্যাতনমূলক শারীরিক সংস্পর্শ: ছুলি সাধারণত এক ব্যক্তির থেকে অন্য ব্যক্তির মধ্যে সরাসরি শারীরিক সংস্পর্শে ছড়ায়। যেমন, যৌন সম্পর্ক বা ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের মাধ্যমে।
  2. একই বিছানা বা জামাকাপড় ব্যবহার: যদি একাধিক ব্যক্তি একই বিছানায় শোয়া বা একই কাপড় বা তোয়ালে ব্যবহার করে, তবে এটি ছড়াতে পারে।
  3. অন্যান্য জীবনযাত্রা: হোস্টেল, ডর্মিটরি বা overcrowded জায়গায় বাস করলে ছুলি সহজে ছড়াতে পারে।

ছুলির লক্ষণ:

  1. চুলকানি: ছুলির প্রধান লক্ষণ হল তীব্র চুলকানি, যা রাতে বা শোয়ার সময় বেশি হতে পারে। এটি ত্বকের প্রদাহের কারণে হয়।
  2. লালচে দাগ বা ফুসকুড়ি: মাইটের কারণে ত্বকে লালচে দাগ, ফুসকুড়ি বা ক্ষত হতে পারে, যা চুলকাতে চরম অস্বস্তি সৃষ্টি করে।
  3. গর্ত বা সুরঙ্গ: মাইট ত্বকে গর্ত করে বাসা বাঁধে, যা দেখতে খুব সূক্ষ্ম হতে পারে।
  4. ফোসকা বা ক্ষত: চুলকানোর ফলে ত্বকে ক্ষত বা ফোসকা তৈরি হতে পারে, যা পরে সংক্রমিত হতে পারে।
  5. আঙ্গুল, কবজি, কনুই, পেট এবং বগলে চুলকানি: ছুলি সাধারণত হাতে, পায়ে, কবজি, কনুই, পেট এবং বগলে বেশি হয়।

ছুলির প্রতিকার:

ছুলি একটি সংক্রামক রোগ, এবং এটি চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ বা নিরাময় করা সম্ভব। ছুলির জন্য সাধারণত নিম্নলিখিত চিকিৎসা পদ্ধতি নেওয়া হয়:

  1. পেশাদার ওষুধ:
    • পিরেথ্রিন (Permethrin) ক্রিম: এটি একটি অ্যান্টি-প্যারাসিটিক ক্রিম যা মাইটকে মেরে ফেলে। এটি সাধারণত ত্বকে লাগানোর জন্য ব্যবহৃত হয় এবং সাধারণত ৮-১২ ঘণ্টার জন্য ত্বকে রাখা হয়।
    • লিনডেন (Lindane) শ্যাম্পু বা ক্রিম: এটি একটি শক্তিশালী চিকিৎসা, তবে এটি কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে, তাই এটি খুব সাবধানে ব্যবহার করা উচিত।
    • ক্রেম বা মলম: যেমন, বেনজাইল বেনজোয়েট (Benzyl benzoate) বা টারমারলিন ক্রিম, যা মাইটের আক্রমণ রোধ করে।
  2. গরম পানি দিয়ে স্নান: গরম পানি দিয়ে স্নান করা, তবে খুব গরম না হওয়া উচিত, যাতে ত্বক শুষ্ক না হয়ে যায়।
  3. কাপড় বিছানা পরিষ্কার রাখা: ছুলির সংক্রমণ ছড়াতে না দেওয়ার জন্য, জামাকাপড়, বিছানার চাদর এবং তোয়ালে ভালোভাবে পরিষ্কার করা উচিত।
  4. শরীরের ত্বক ভালোভাবে পরিষ্কার করা: একটি অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল সাবান দিয়ে শরীর ভালোভাবে পরিষ্কার করা।
  5. অ্যান্টিহিস্টামিন: চুলকানি কমানোর জন্য অ্যান্টিহিস্টামিনও ব্যবহার করা যেতে পারে।
  6. সব পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা: একবার যদি একজন সদস্য ছুলির শিকার হয়, তবে তাদের সংস্পর্শে আসা অন্য সদস্যদেরও চিকিৎসা করা প্রয়োজন, যাতে রোগটি ছড়িয়ে না পড়ে।
  7. ডাক্তারের পরামর্শ: ছুলি যদি বেশি তীব্র হয়ে যায় বা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে একজন ডার্মাটোলজিস্ট বা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

ছুলির প্রতিরোধ:

  1. ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা: ভালোভাবে হাত ধোয়া, এবং অন্যদের সঙ্গে শারীরিক সংস্পর্শে আসার আগে সাবধানতা অবলম্বন করা।
  2. জামাকাপড় বিছানা পরিষ্কার রাখা: জামাকাপড়, বিছানার চাদর, তোয়ালে ইত্যাদি নিয়মিত ধোয়া এবং শুকানো উচিত।
  3. অন্যান্য মানুষের সাথে শারীরিক যোগাযোগ থেকে বিরত থাকা: যদি কোনো ব্যক্তি ছুলির শিকার হন, তাহলে তার সঙ্গে শারীরিক সংস্পর্শ এড়ানো উচিত।

ছুলি খুবই সংক্রামক রোগ, তাই এটি দ্রুত চিকিৎসা করা এবং সতর্কতা অবলম্বন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *