Best Homeo Doctor

চোখ ওঠা কি,কারন,লক্ষন,প্রতিকার

চোখ ওঠা (Conjunctivitis) হলো চোখের পাতার ভেতরের স্তর (যা কনজাঙ্কটিভা নামে পরিচিত) প্রদাহিত হওয়া। এটি সাধারণত ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, অ্যালার্জি বা কোনো ধরনের রোগের কারণে হতে পারে। চোখ ওঠা খুবই সাধারণ একটি সমস্যা, যা সাধারণত সংক্রামক হয় এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।

চোখ ওঠার কারণ:

  1. ভাইরাসজনিত সংক্রমণ: ভাইরাসজনিত চোখ ওঠা বেশ সাধারণ এবং সাধারণত সর্দি-কাশি বা ফ্লুর সাথে সম্পর্কিত। এটি ছোঁয়াচে, অর্থাৎ আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির মধ্যে সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে।
  2. ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ: কিছু ব্যাকটেরিয়া, যেমন স্ট্রেপটোকোক্কাস বা স্টাফিলোকোক্কাস, কনজাঙ্কটিভায় সংক্রমণ সৃষ্টি করতে পারে। এই ধরনের চোখ ওঠা সাধারণত চোখে পুঁজ জমে যাওয়ার সাথে থাকে।
  3. অ্যালার্জি: কোনো কিছু, যেমন ধুলা, ফুলের রেণু, পশুর লোম, বা তীব্র গন্ধের কারণে চোখে অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে, যা চোখ ওঠার কারণ হয়।
  4. ক্ষতিকারক পদার্থের প্রভাবে: কোনো কিছু চোখে ঢুকে গেলে, যেমন ধোঁয়া বা রাসায়নিক পদার্থ, তাও কনজাঙ্কটিভার প্রদাহ ঘটাতে পারে।
  5. কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার: দীর্ঘ সময় কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করলে চোখে প্রদাহ হতে পারে, বিশেষত যদি সেগুলো সঠিকভাবে পরিষ্কার না করা হয়।

চোখ ওঠার লক্ষণ:

  1. চোখে লালভাব: কনজাঙ্কটিভার প্রদাহের কারণে চোখে লালভাব দেখা দেয়।
  2. চোখে জ্বালা বা চুলকানি: চোখে অস্বস্তি বা চুলকানি অনুভূতি হতে পারে।
  3. পানি পড়া বা আর্দ্রতা: চোখ থেকে অস্বাভাবিকভাবে পানি পড়তে পারে।
  4. পুঁজি বা ক্রাস্টিং: বিশেষত ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণে চোখের কোণায় পুঁজি জমতে পারে, যা চোখ বন্ধ করা কঠিন করে তোলে।
  5. দৃষ্টি ঝাপসা বা অস্পষ্টতা: চোখ ওঠার কারণে কখনও কখনও দৃষ্টি ঝাপসা হতে পারে।
  6. চোখে ব্যথা বা অস্বস্তি: চোখে ব্যথা বা অনুভূতি হতে পারে।

চোখ ওঠার প্রতিকার:

  1. হালকা গরম পানি দিয়ে ধোয়া: চোখে পরিষ্কার গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে পারেন, যা অস্বস্তি দূর করতে সাহায্য করবে।
  2. অ্যান্টিঅ্যালার্জি ড্রপস: অ্যালার্জি থেকে যদি চোখ ওঠে, তবে অ্যান্টি-অ্যালার্জি ড্রপস ব্যবহার করা যেতে পারে।
  3. চোখের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপস বা ওষুধ: ব্যাকটেরিয়াল চোখ ওঠার জন্য চিকিৎসক অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপস বা মলম প্রদান করতে পারেন।
  4. চোখে হাত না দেয়া: চোখে হাত না দিয়ে চোখের সঙ্গে সংস্পর্শ কমান, কারণ এটি সংক্রমণ ছড়াতে সাহায্য করতে পারে।
  5. অপারেশন বা চিকিত্সকের পরামর্শ: যদি চোখ ওঠা গুরুতর হয়ে থাকে বা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

চোখ ওঠা প্রতিরোধের উপায়:

  1. হাত পরিষ্কার রাখা: চোখে হাত না দেয়ার আগে এবং পরে হাত ধোয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
  2. ব্যক্তিগত হাইজিন বজায় রাখা: টিস্যু বা তোয়ালে অন্যদের সঙ্গে শেয়ার না করা, বিশেষত সংক্রমণ হলে।
  3. কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহারের সতর্কতা: কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহারকারীরা অবশ্যই সঠিকভাবে তাদের লেন্স পরিষ্কার করবেন এবং অস্বাভাবিক কোনো অনুভূতি হলে তা ব্যবহার বন্ধ করবেন।
  4. অ্যালার্জি থেকে দূরে থাকা: যেসব পরিবেশে অ্যালার্জি সৃষ্টি হয়, সেখানে যেতে এড়িয়ে চলা উচিত।

যদি চোখ ওঠা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা অন্যান্য গুরুতর লক্ষণ দেখা দেয় (যেমন গুরুতর ব্যথা, দৃষ্টির সমস্যা, বা সাঁতার কাটার মতো অবস্থায়), তবে দ্রুত একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *