চিকুন গুনিয়া (Chikungunya) একটি ভাইরাল রোগ যা এডিস মশা (এডিস আযিপ্টি এবং এডিস আলবোপিকটাস) দ্বারা ছড়ায়। এটি সাধারণত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এবং উপগ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে বেশি দেখা যায়, তবে বর্তমানে অনেক দেশেই এর প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে।
চিকুন গুনিয়ার কারণ:
চিকুন গুনিয়ার মূল কারণ হলো চিকুন গুনিয়া ভাইরাস, যা এডিস মশার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ছড়ায়। এই মশাগুলি সংক্রমিত ব্যক্তির রক্ত থেকে ভাইরাস গ্রহণ করে এবং তারপর এটি অন্যদের মধ্যে ছড়ায়।
চিকুন গুনিয়ার লক্ষণ:
চিকুন গুনিয়ার প্রধান লক্ষণগুলো হলো:
- উচ্চ তাপমাত্রা (প্রায় ১০০-১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট)
- গা ও শরীরে তীব্র ব্যথা (বিশেষত হাড় ও joints এর ব্যথা, যা অনেকদিন ধরে থাকতে পারে)
- গাঁটে ব্যথা (জয়েন্টের ব্যথা, বিশেষ করে হাত, পা, হাঁটু এবং কনুইতে)
- চর্মে র্যাশ (অনেক ক্ষেত্রে র্যাশ দেখা যায়)
- মাথাব্যথা
- শক্তি কমে যাওয়া এবং ক্লান্তি
- বমি বা বমি ভাব
- অস্থিরতা এবং শরীরের অন্য অঙ্গেও ব্যথা অনুভব করা
চিকুন গুনিয়ার প্রতিকার:
চিকুন গুনিয়ার জন্য কোনো নির্দিষ্ট অ্যান্টিভাইরাল চিকিৎসা নেই, তবে চিকিৎসা ব্যবস্থার মধ্যে:
- প্যারাসিটামল বা ইবুপ্রোফেন: জ্বর এবং ব্যথা কমানোর জন্য।
- বিশ্রাম: শরীরের সঠিক বিশ্রাম নিতে হবে।
- পানির পরিমাণ বজায় রাখা: শরীরের পানি ও লবণ ভারসাম্য বজায় রাখতে প্রচুর পানি পান করতে হবে।
- মশা প্রতিরোধী ব্যবস্থা: মশার কামড় থেকে বাঁচতে মশারি ব্যবহার করা, মশা প্রতিরোধী ক্রিম বা স্প্রে ব্যবহার করা উচিত।
- অ্যান্টি–হিস্টামিন: অ্যালার্জি বা চর্ম র্যাশের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টি-হিস্টামিন ব্যবহার করা যেতে পারে।
চিকুন গুনিয়া প্রতিরোধ:
- মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করা: বাড়ির আশেপাশে জমে থাকা পানি পরিষ্কার করতে হবে যাতে মশার প্রজননস্থল না তৈরি হয়।
- মশারি ব্যবহার: ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করতে হবে।
- মশার repellant ব্যবহার: শরীরে মশা প্রতিরোধী তেল বা স্প্রে ব্যবহার করা।
চিকুন গুনিয়া থেকে সেরে উঠতে সময় লাগতে পারে, তবে সাধারণত চিকিৎসা এবং বিশ্রাম নিয়ে রোগীরা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেন।