Best Homeo Doctor

ক্ষুধা অতিরিক্ত কি,কারন,লক্ষন,প্রতিকার

ক্ষুধা অতিরিক্ত (Hyperphagia) বলতে বুঝায় এমন একটি অবস্থা যেখানে মানুষ অত্যধিক পরিমাণে খাবার খায়, যা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি। এটি সাধারণত শরীরের স্বাভাবিক খাওয়ার প্রবণতার বাইরে চলে যায় এবং এর ফলে অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধির পাশাপাশি কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে।

কারণ:

  1. মানসিক চাপ উদ্বেগ:
    • মানসিক চাপ, উদ্বেগ, অথবা বিষণ্ণতা (ডিপ্রেশন) কখনও কখনও অতিরিক্ত খাওয়ার দিকে ঠেলে দিতে পারে। মানুষ খাদ্যকে মানসিক শান্তির উপায় হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।
  2. হরমোনাল সমস্যা:
    • লেপটিন এবং গ্লুকাগন হরমোনের অসামঞ্জস্যতা খাদ্যের প্রতি অতিরিক্ত আগ্রহ তৈরি করতে পারে। এই হরমোনগুলি ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।
  3. বিভিন্ন রোগ বা অবস্থা:
    • ডায়াবেটিস (যতটা ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণ হয় না, ততটা ক্ষুধা বাড়ে)।
    • হাইপোথ্যালামাসের সমস্যা: মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস অংশ ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়ী, এতে কোনও সমস্যা হলে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা দেখা দিতে পারে।
  4. দ্রুত মেটাবলিজম বা অতিরিক্ত শারীরিক কাজ:
    • ক্রীড়াবিদ বা যে কোন পেশাদার বা শারীরিকভাবে সক্রিয় মানুষদের মাঝে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা দেখা দিতে পারে।
  5. অ্যানোরেক্সিয়া বা বুলিমিয়া:
    • কিছু মানসিক রোগ যেমন অ্যানোরেক্সিয়া বা বুলিমিয়া প্ররোচিত করে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা।
  6. ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:
    • কিছু ওষুধের কারণে অতিরিক্ত ক্ষুধা অনুভূত হতে পারে, যেমন স্টেরয়েড বা কিছু অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট ওষুধ।

লক্ষণ:

  1. অতিরিক্ত খাওয়া:
    • স্বাভাবিকের তুলনায় অতিরিক্ত পরিমাণে খাবার খাওয়া।
  2. বডি মাস ইনডেক্স (BMI) বৃদ্ধি:
    • অত্যধিক খাওয়া এবং শারীরিক অশান্তির কারণে ওজন বৃদ্ধি।
  3. শরীরের অস্বস্তি বা পেট ফেঁপে যাওয়া:
    • অতিরিক্ত খাওয়ার কারণে পেটে অস্বস্তি বা ফেঁপে যাওয়া অনুভব হতে পারে।
  4. মানসিক বা আবেগগত প্রভাব:
    • খাওয়ার সময় মানসিক শান্তির অনুভূতি পাওয়া, কিন্তু পরে অপরাধবোধ বা দুঃখজনক অনুভূতি।

প্রতিকার:

  1. স্বাস্থ্যকর খাবারের নির্বাচন:
    • খাবারের পছন্দ পরিবর্তন করে স্বাস্থ্যকর ও পরিমিত খাবার খাওয়া উচিত। সবজি, ফলমূল, প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা উচিত।
  2. মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখা:
    • মানসিক চাপ বা উদ্বেগের জন্য যোগব্যায়াম, মেডিটেশন, বা কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে সহায়তা নেওয়া যেতে পারে।
  3. বিরতি নিয়ে খাওয়া:
    • খাওয়ার সময় ধীরে ধীরে খাওয়া এবং সঠিক সময়ে বিরতি নিয়ে খাওয়া অতিরিক্ত ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
  4. ওজন নিয়ন্ত্রণ:
    • নিয়মিত শরীরচর্চা এবং খাবারের নিয়ন্ত্রণ দিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা গুরুত্বপূর্ণ।
  5. ডাক্তারের পরামর্শ:
    • যদি এটি কোনও রোগ বা হরমোনাল অসামঞ্জস্যের কারণে হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত।
  6. স্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইল:
    • ঘুমের পরিমাণ ঠিক রাখা এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া, যা ক্ষুধার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে।

ক্ষুধা অতিরিক্ত হলে যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি, কারণ এটি অন্য কোনও স্বাস্থ্য সমস্যার চিহ্ন হতে পারে।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *