Best Homeo Doctor

কৃমি কি,কারন,লক্ষন,প্রতিকার

কৃমি (Worms) হল একপ্রকার পরজীবী যা মানুষের অন্ত্র বা অন্যান্য অঙ্গ-প্রাঙ্গণে বাস করে এবং খাবার থেকে পুষ্টি গ্রহণ করে। কৃমি মানুষের শরীরে নানা উপায়ে প্রবেশ করতে পারে এবং সাধারণত ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। এটি একটি খুব সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা, বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে।

কৃমির কারণ:

কৃমির সংক্রমণ প্রধানত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, অপরিষ্কার খাদ্য, এবং অপরিষ্কার পানি থেকে হয়ে থাকে। কিছু সাধারণ কারণ হল:

  1. অস্বাস্থ্যকর খাবার: অপরিষ্কার বা অজ্ঞানভাবে রান্না করা খাদ্য খেলে কৃমির সংক্রমণ হতে পারে।
  2. অপরিষ্কার পানি: অপরিষ্কার বা দূষিত পানি পান করলে কৃমির জীবাণু শরীরে প্রবেশ করতে পারে।
  3. শিশুদের মাঝে মাটি খাওয়া: কিছু কৃমি (যেমন এস্কারিস) মাটির মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করতে পারে, তাই শিশুদের মাঝে মাটি খাওয়া কৃমির সংক্রমণের জন্য অন্যতম কারণ হতে পারে।
  4. অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ: অপরিষ্কার পরিবেশে থাকা, হাত না ধুয়ে খাবার খাওয়া বা ঘরবাড়ির নোংরা পরিস্থিতি কৃমির সংক্রমণের কারণ হতে পারে।
  5. পোষা প্রাণী: কিছু পোষা প্রাণী যেমন কুকুর বা বিড়ালেও কৃমি থাকতে পারে, যেগুলি মানুষকে সংক্রমিত করতে পারে।
  6. অপরিষ্কার শৌচালয়: অপরিষ্কার শৌচালয়ে বসা বা শৌচকর্মের পর হাত না ধোয়া কৃমি সংক্রমণের অন্যতম কারণ।

কৃমির লক্ষণ:

কৃমির লক্ষণ তার প্রকারভেদ অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে, তবে কিছু সাধারণ লক্ষণ আছে:

  1. পেটের ব্যথা: কৃমির কারণে পেটব্যথা বা অসুখী অনুভূতি হতে পারে, বিশেষ করে মলত্যাগের সময়।
  2. কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া: কৃমির কারণে পেটের গতি বিঘ্নিত হতে পারে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
  3. অস্বাভাবিক ক্ষুধা: কৃমি শরীর থেকে পুষ্টি গ্রহন করে, যার ফলে অনেক সময় ক্ষুধা বেড়ে যেতে পারে বা খুব কমেও যেতে পারে।
  4. গা white বা হলুদ মল: কৃমি সংক্রমণের কারণে মল হতে পারে গা white ় বা হলুদ রঙের।
  5. শরীরে ফোলাভাব বা পানির আধিক্য: কৃমির কারণে শরীরে পানি জমে যেতে পারে, যার ফলে ফোলাভাব বা বমি হওয়ার সমস্যা হতে পারে।
  6. বিশেষ ধরনের কৃমি (যেমন, এস্কারিস): কিছু কৃমি মলদ্বারে বা শরীরের অন্যান্য অংশে দেখতে পাওয়া যায়, বিশেষত রাতে, যখন কৃমি মলদ্বারে আসে এবং পেটের বাইরের দিকে চলে আসে।
  7. শক্তিশালী ক্লান্তি বা অল্প শক্তির অভাব: কৃমির কারণে শরীরের পুষ্টির অভাব হতে পারে, যার ফলে সাধারণ ক্লান্তি বা শারীরিক দুর্বলতা হতে পারে।
  8. অনিদ্রা বা নিদ্রাহীনতা: কৃমির কারণে রাতে ঘুমের মধ্যে অস্বস্তি বা মলদ্বারে চুলকানি হতে পারে, যা নিদ্রাহীনতা সৃষ্টি করতে পারে।

কৃমির প্রতিকার:

  1. ওষুধ:
    • কৃমির জন্য বেশ কিছু অ্যান্টি-প্যারাসাইটিক ওষুধ রয়েছে, যেমন মেবেনডাজল বা আলবেনডাজল, যা চিকিৎসক দ্বারা প্র prescribed করতে হয়। এগুলি কৃমি ধ্বংস করে এবং শরীর থেকে বের করে।
    • পিপেরাজিন (যে কৃমি বিশেষ করে এস্কারিস এবং অ্যাডাল্ট হুকওয়ার্ম) এর জন্য ব্যবহৃত হতে পারে।
  2. স্বাস্থ্যকর খাদ্য পানি:
    • ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া এবং পর্যাপ্ত পানি পান করা অন্ত্রের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক। সবজির মধ্যে ভালোভাবে ধুয়ে খাওয়া নিশ্চিত করা উচিত।
    • খাবার খাওয়ার আগে ভালোভাবে হাত ধোয়া এবং খাবার প্রস্তুতির সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  3. হাত ধোয়া অভ্যাস:
    • শৌচকর্মের পর, খাবার খাওয়ার আগে এবং বাইরে থেকে ফিরে ভালোভাবে হাত ধোয়া কৃমির সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সহায়ক।
  4. পরিষ্কার শৌচাগার ব্যবহৃত করা:
    • শৌচাগারের স্বাস্থ্যকর ব্যবহার, টয়লেট পরিষ্কার রাখা এবং শৌচকর্মের পরে হাত ধোয়া কৃমির সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করতে পারে।
  5. অস্ত্রোপচার (যদি প্রয়োজন হয়):
    • কৃমি যদি খুব গুরুতর বা দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা সৃষ্টি করে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শে অস্ত্রোপচারও প্রয়োজন হতে পারে, যেমন বড় আকারের কৃমির জন্য অপারেশন।
  6. পোষা প্রাণীর পরিচ্ছন্নতা:
    • পোষা প্রাণীদের নিয়মিত চিকিৎসা করানো এবং তাদের পরিষ্কার রাখা কৃমির সংক্রমণ এড়াতে সহায়ক।
  7. পরিষ্কার পরিবেশ:
    • ঘরবাড়ি এবং বাসস্থান পরিষ্কার রাখা, মাটিতে খেলতে না দেওয়া এবং শিশুদের নিরাপদ পরিবেশে রাখা কৃমির সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে।

পরামর্শ:

কৃমি সংক্রমণ কখনও কখনও গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, তাই যদি কৃমির লক্ষণ দেখা যায়, তবে দ্রুত একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। চিকিত্সকের নির্দেশনায় সঠিক চিকিৎসা এবং প্রতিকার গ্রহণ করা উচিত।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *