কানে শব্দ কি,কারন,লক্ষন,প্রতিকার

কানে শব্দ হওয়া বা “টিনিটাস” (Tinnitus) হল এক ধরনের অবস্থা যেখানে কানে কোনও বাইরের শব্দ না থাকলেও মানুষের নিজের কানে এক ধরনের শব্দ শুনতে পাওয়া যায়। এটি অনেক ধরনের হতে পারে, যেমন শিঙা বাজানো, ভোঁ ভোঁ শব্দ, অথবা হুইসেল জাতীয় শব্দ।

কারণ:

কানে শব্দ হওয়ার বিভিন্ন কারণ হতে পারে, যেমন:

1. শব্দের ক্ষতি: বেশী জোরে শব্দ শোনা (যেমন হেডফোনে উচ্চস্বরে গান শোনা) কানের মধ্যে শোনার সেলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
2. বয়সজনিত পরিবর্তন: বয়স বাড়ার সাথে সাথে কানের সেলগুলোর কার্যকারিতা কমে যেতে পারে, যা টিনিটাসের কারণ হতে পারে।
3. কানের ইনফেকশন: কানে ইনফেকশন বা বাতাসের চাপ পরিবর্তনেও কানে শব্দ হতে পারে।
4. কানের ময়লা বা অবরোধ: কানের ভিতরে ময়লা জমে গেলে বা হালকা অবরোধ হলে তাও টিনিটাস সৃষ্টি করতে পারে।
5. শরীরিক বা মানসিক চাপ: অতিরিক্ত মানসিক বা শারীরিক চাপও টিনিটাসের কারণ হতে পারে।
6. যেসব ওষুধ কানে প্রভাব ফেলতে পারে: কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ যেমন অ্যান্টিবায়োটিক, ডায়ুরেটিক্স বা অ্যাস্পিরিনের ব্যবহার টিনিটাস সৃষ্টি করতে পারে।

লক্ষণ:

টিনিটাসের প্রধান লক্ষণ হল কানে বিভিন্ন ধরনের শব্দ শুনতে পাওয়া যা প্রকৃতপক্ষে বাইরের কোন শব্দ নয়। এই শব্দগুলো হতে পারে:

• শিঙা বাজানো
• ভোঁ ভোঁ বা গুনগুন শব্দ
• সীসা বা হুইসেল জাতীয় শব্দ
• ঝাঁঝাল বা সোঁ সোঁ শব্দ

প্রতিকার:

টিনিটাসের সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই, তবে কিছু উপায় রয়েছে যেগুলি লক্ষণ কমাতে সাহায্য করতে পারে:

1. শব্দ থেরাপি: শান্তিপূর্ণ শব্দ বা সাদা শব্দ (white noise) শোনা, যা কানের শব্দকে আড়াল করতে সাহায্য করতে পারে।
2. মেডিকেশন: কিছু ওষুধ যেমন অ্যান্টিডিপ্রেস্যান্ট বা অ্যান্সিয়োলাইটিকস কিছু ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে।
3. শরীরিক এবং মানসিক চাপ কমানো: নিয়মিত ব্যায়াম এবং মানসিক চাপ কমানোর জন্য মেডিটেশন বা যোগব্যায়াম সাহায্য করতে পারে।
4. কানে অবরোধের জন্য চিকিৎসা: কানে ময়লা জমে থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কানের ময়লা পরিষ্কার করা।
5. অডিওথেরাপি: বিশেষ কিছু যন্ত্র বা ডিভাইস ব্যবহার করা যা কানের শব্দের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে পারে।

যদি টিনিটাস দীর্ঘস্থায়ী হয় বা ভয়াবহ হয়ে উঠতে থাকে, তবে বিশেষজ্ঞ কানের চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।